

মির্জা তুষার আহমেদ,নওগাঁ :নওগাঁ সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বলিহার দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ের বার্ষিক আয় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা হওয়া সত্ত্বেও, স্কুলটির অবকাঠামোগত সংস্কার, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মান উন্নয়ন এবং স্কুলের সার্বিক উন্নয়নে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সরজমিনে বিদ্যালয়ের বর্তমান চিত্র দেখলে সহজেই অনুধাবন করা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ভেঙে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা, ময়লার স্তুপ জমেছে শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে। ভবনের বেশিরভাগ জানালার গ্লাস গুলো ভাঙ্গা। এছাড়াও ছেলে ও মেয়েদের দুইটি আলাদা টয়লেট থাকলেও যা ব্যবহারে একেবারেই অনুপোযোগী। ছাত্রছাত্রীদের টয়লেট ব্যবহার করার প্রয়োজন হলে স্কুলের বাইরে যেতে হয়। দেখা যায় মেয়েদের কমনরুমে ইস্কুলের নাইটগেট বিছানা করে ঘুমানোর পাশাপাশি দিনে বিশ্রাম নিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির চারিদিকে বাউন্ডারি থাকার কারণে বহিরাগত কেউ ভেতরে প্রবেশ করা কথা না থাকলেও, স্কুলের ভেতরে প্রায় সময় ধূমপানের অবশিষ্ট অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
অন্যদিকে বিদ্যালয়ের একটি ল্যাব থাকলেও সেখানে থাকা ল্যাপটপগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ল্যাব থাকলেও তাদের সেখানে বসার তেমন একটা সুযোগ দেওয়া হয় না। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করার জন্য নেই কোন সরঞ্জাম যা আছে সেগুলো খেলার অনুপযোগী। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি ও অভিযোগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে আফজাল হোসেন প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই অনিয়ম দুর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। শিক্ষক, নৈশ প্রহরী অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক, পদে নিয়োগ দিয়ে ৪৭ লক্ষ টাকা নিলেও স্কুল খাতে জমা করা হয়নি একটি টাকাও। এছাড়াও গত ১২-১৩ বছরের স্কুলটি বাৎসরিক আয় প্রায় ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। যা থেকে সামান্য কিছু টাকা বিদ্যালয়ের খাতে জমা দিলেও ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও বিদ্যালয়ের নিজস্ব পুকুর গোপনে লিজ দেওয়া এবং গাছ কর্তনের অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তবে ক্যামের কোন মন্তব্য করেননি তিনি।এ বিষয়ে নওগাঁ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ওয়াসিউর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি অনিয়ম-দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।