চাঁদপুরের কচুয়ায় ছোঁয়াচে স্ক্যাবিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা

Share the post
আহসান হাবীব সুমন, কচুয়া ( চাঁদপুর) প্রতিনিধি : চাঁদপুরের কচুয়ায় স্ক্যাবিস নামক চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী সেবা নিতে আসেন। এর মধ্যে ১০০ থেকে ১৫০ জন চর্মরোগ নিয়ে আসেন, যাদের ৯০ শতাংশই স্ক্যাবিস রোগে আক্রান্ত। প্রতিদিনই হাসপাতালে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসকরা বলছেন, স্ক্যাবিস হলে সারা শরীর চুলকাতে থাকে। আঙুলের ফাঁকে, নিতম্ব, যৌনাঙ্গ, হাতের তালু, কবজি, বগল, নাভি ও কনুইয়ে চুলকানি শুরু হয়। পরে সমস্যা আরও বাড়তে থাকে। রাতে চুলকানি বেশি হয়ে থাকে। ছোট ছোট ফুসকুড়ি ওঠে, যা খুব চুলকায় এবং তা থেকে পানির মতো তরল পদার্থ বের হতে পারে। বিশেষ করে গরমকালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় ঘাটতি হলে এ রোগ বেশি হয়। নিয়ম মেনে চললে দুই সপ্তাহের চিকিৎসায় এ রোগ নিরাময়যোগ্য।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে চর্মরোগীর সংখ্যাই বেশি। কেউ এসেছেন পুরো শরীরে ঘামাচির মতো ছোট ছোট ফুসকুড়ি সঙ্গে তীব্র চুলকানি নিয়ে। কেউ এসেছেন খোসপাঁচড়া নিয়ে। তবে এদের মধ্যে স্ক্যাবিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বেশি।
চর্মরোগে আক্রান্ত ১ মাসের সন্তানকে হাসপাতালে নিয়ে আসা উপজেলার  মরিয়ম‌ জানান,কিছুদিন ধরে আমার বাচ্চার শরীর চুলকাচ্ছে। চুলকানি আস্তে আস্তে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই আজকে ডাক্তার দেখালাম। ডাক্তার বলছে স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হয়েছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রেজাউল করিম বলেন, ‘শিশুদের চর্মরোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্ক্যাবিস। এটি খুবই ছোঁয়াচে রোগ। পরিবারের একজনের হলে অন্য সদস্যদেরও হতে পারে। এ জন্য আক্রান্ত রোগীসহ পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। যেহেতু গরমকালে এ রোগটি বেশি দেখা দেয় সেহেতু বাচ্চাদের কুসম গরম পানি দিয়ে নিয়মিত গোসল করাতে হবে, ধুলাবালি থেকে দূরে রাখতে হবে, অ্যালার্জি জাতীয় খাবারগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে, লিকুইড জাতীয় খাবার বেশি খাওয়াতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, প্রতিদিনই হাসপাতালে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা সাধ্যমতো রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। ছোট-বড় সবাই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত কাপড়, গামছা, তোয়ালে, বিছানার চাদর, বালিশ ব্যবহার করলে একজন থেকে আরেকজনে এ রোগ ছড়াতে পারে। তাই এ রোগে আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত কাপড় পরিবারের অন্যদের ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

ভোলায় আন্তর্জাতিক প্রসবকালীন ফিস্টুলা নির্মূল দিবস ২০২৫ পালিত

Share the post

Share the postবিশ্বব্যাপী ২৩ মে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক প্রসবকালীন ফিস্টুলা নির্মূল দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য: “২০ বছর পর – অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু যথেষ্ট নয়! এখনই পদক্ষেপ নিন, ২০৩০ সালের মধ্যে ফিস্টুলা নির্মূল করুন!” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ভোলা জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে এবং সিআইপিআরবি ও ইউএনএফপিএ-এর সহায়তায় পালিত হলো দিবসটি। ভোলা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে […]

পিরোজপুরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন

Share the post

Share the postআলী ইমাম অন্তু,পিরোজপুর প্রতিনিধি :পিরোজপুরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ৮ দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আয়োজনে জেলা স্টেডিয়াম হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন। আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া […]