“আওয়ামী লীগ নেতা রাসেলের ব্যতিক্রমী উদ্যোগে ভ্রাম্যমান ফ্রী সবজি ভ্যান”
নোমান বিন খুরশীদ (চট্টগ্রাম): বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সাবেক সদস্য জনাব মোঃ রাশেদুল ইসলাম রাসেলের ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যে “ফ্রী সবজি বাজার” চালু করেন তিনি এর নাম দেন “ভালবাসার ভ্যানগাড়ি”! স্থানীয় প্রান্তিক কৃষক যারা সব সময় ন্যায্য মূল্য পান না তাদের নিকট হতে প্রকৃত দামের চেয়ে কিছু বেশী দামে সবজি কিনে নিয়ে বিনামূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে বিতরণ করছেন তিনি। চট্টগ্রাম-৫ আসনের অন্তর্ভুক্ত হাটহাজারী উপজেলায় প্রশাসনের নির্দেশে স্কুল মাটে বসছে কাঁচা বাজার। সামাজিক দুরুত্ব নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ। আপদকালীন এই সময়ে সাধারন মানুষের জন্য ব্যতিক্রমী ” ফ্রী সবজি বাজার” চালু করলেন তরুণ এই আওয়ামী লীগ নেতা। কাঁচা বাজারগুলো বসে বেলা ১১টা পর্যন্ত, রাসেলের ভ্রাম্যমাণ সবজি বাজার তথা ভ্যানগুলো এরপর উপজেলার বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় চলে যায় এবং ফ্রীতে সবজি সরবরাহ করে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “বাজার টাইমে এই ভ্যানগুলো বাজারের মুখে বসবে, বাজার বন্ধ হলে বিভিন্ন আবাসিক বা জনবসতি এলাকায় যাবে আর আহ্বান জানাবে প্রয়োজনীয় সবজি সংগ্রহ করার”। বাজারের এই ফ্রী সবজি বিতরণের স্থানে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব রুহুল আমীন উপস্থিত হয়ে এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “রাসেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই কাজ করে আসছেন আর এখন বাজারের কৃষকদের নিকট হতে সবজি ক্রয় করে বিনামূল্যে সাধারন মানুষের নিকট বিতরণ আসলেই খুব ভাল উদ্যোগ এবং এটি সত্যি অনুসরণীয়”। সাবেক ছাত্রনেতা ও তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা রাসেল টেলিফোনে যুক্ত হয়ে বলেন, ” আমরা সবজি বিনামূল্যে দিচ্ছি পাশাপাশি কারো প্রয়োজনের অতিরিক্ত সবজি থাকলে তা আমাদের অনুদান হিসেবে দেওয়ারও অনুরোধ করছি যাতে একটা সামঞ্জস্যপূর্ণ মানবিক সমাজ তথা পরষ্পরের প্রতি ভালবাসার, শ্রদ্ধার, আবেগের সম্পর্ক গড়ে উঠে এই আপদকালীন সময়ে”। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় আওয়ামী লীগের এই নেতার উদ্যোগ যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখার জন্য ভ্যান গাড়িগুলোর সামনে তিন ফুট দুরুত্বে ছক করে দাঁড়ানোর স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়, যার ফলে সামাজিক দুরুত্ব নিশ্চিত হচ্ছে। এছাড়াও হাত ধোয়ার জন্য বাজারের বিভিন্ন স্থানে পানির ড্রাম ও কলের ব্যবস্থা করা হয় সাথে সাবান ও হ্যান্ড সেনিটাইজারও রয়েছে। ভ্যানগুলোতে দায়িত্বরত ভলান্টিয়াররা সবজি নিতে আসা মানুষদের ওয়াদা করান তারা যেন অতি প্রয়োজন ব্যতিত ঘর থেকে বের না হন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখেন। স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দকে বাজারের বিভিন্ন স্থানে জীবাণু নাশক স্প্রে করতেও দেখা যায়। এখানে উল্লেখ্য সাবেক এই ছাত্রনেতা করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রথম থেকেই মাটে সক্রিয় ছিলেন। শুরুতে তিনি সচেতনতা সৃষ্টির জন্য লিফলেট বিতরণ করেছিলেন, এরপর ফেস মাস্ক, হ্যান্ড সেনিটাইজার বিতরণ করেন চট্টগ্রাম-৫ আসনের অন্তর্গত ১৪টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও চট্টগ্রাম নগরের ২টি ওয়ার্ডে। পুরো মার্চ মাস জুড়েই ছিল এই কার্ক্রম। এরপর ৩১শে মার্চ হতে ১৬০০ গৃহে অবস্থানকারী পরিবারের জন্য খাদ্য সামগ্রী উপহার স্বরূপ প্রেরণ করেন। ২য় ধাপে আবারো ৬০০ পরিবারের জন্য “বৈশাখী উপহার” প্রেরণ করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা অনেক চ্যালেঞ্জিং, তাই আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে প্রকৃত ভুক্তভোগী পরিবারের তালিকা সংগ্রহ করে সেখানে আমার স্বেচ্ছাসেবক দলের মাধ্যমে সরাসরি এই খাদ্য সামগ্রী পাঠাচ্ছি”। আর আজ নতুন ধাপে তিনি ভ্রাম্যমাণ ফ্রী সবজি বাজার চালু করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ” আমি চাই এমন মন মানসিকতা গড়ে তুলতে যেখানে যার আছে সে দিবে যার নাই সে নিবে, এভাবে পরষ্পরের প্রতি ভালবাসায় ও সহযোগিতায় গড়ে উঠবে মানবিক হাটহাজারী আর এতে সরকারের উপর ত্রাণ সরবরাহের চাপও কমবে”। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ” আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ফুড ব্যাংক চালু করা যেখান থেকে মানুষ বিনামূল্যে খাবার সংগ্রহ করবে আর কেউ অতিরিক্ত খাবার নষ্ট না করে ব্যাংকে জমা দিবে, উন্নত দেশগুলোতে এই ফুড ব্যাংক খুবই জনপ্রিয়!” তিনি আরো উল্লেখ করেন, “আমরা যদি সারা দেশে স্থায়ী ফুড ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে পারি তাহলে ক্ষুধা মুক্ত দেশ গড়ে তুলতে পারবো এছাড়াও জাতি সংঘের ২০৩০ সালের মধ্যে যে ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ক্ষুধামুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রটিও অনেকাংশে অর্জন করতে পারবো”। আজ ভ্রাম্যমাণ এই সবজি ভ্যানে ছিল আলু, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, শসা, লাল শাক, পুঁই শাক, নারিস শাক ইত্যাদি। বাজার বন্ধ হওয়ার পর ভ্যান গাড়িগুলো পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড পদক্ষিণ করে ও ভলান্টিয়াররা বিনামূল্যে সবজি বিতরণ করে। রাসেলের ভলান্টিয়ার দলে ছিল কো-অর্ডিনেটর রাশেদুল আলম জিসান, এস এম মুহিন উদ্দিন, ইব্রাহিম রানা, রাশেদ, আব্দুল মান্নান সুমন, সবুজ মেহের, মোরশেদ, তানভিনসহ আরো অনেকে।