ইউটিউবে কৃষি বিষয়ক প্রতিবেদন দেখে কাশ্মীরি নূরানী আপেল কুল চাষ
মোঃজাকির হোসেন মাধবপুর(হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: হালকা গোলাপি, সবুজ ও হালকা হলুদের মাঝের অংশজুড়ে লালচে বর্ণ। দেখতে অনেকটা মাঝারি আকৃতির আপেলের মতো। খেতে সুস্বাদু। নাম কাশ্মীরি কুল। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে এ জাতের কুল। উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের মেহেরগাঁও গ্রামের শিক্ষিত যুবক বাচ্চু মিয়া ইউটিউবে কৃষি বিষয়ক প্রতিবেদন দেখে কাশ্মীরি নূরানী আপেল কুল চাষে উদ্বুদ্ধ হন বাচ্চু মিয়া। আখাউড়া শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে সৌদিআরব পাড়ি জমান বাচ্চু মিয়া। ১২ বছর পর দেশে ফিরে কাশ্মীরি নূরানী আপেল কুলের বাগান করে সাফল্যের মুখ দেখছেন সৌদি আরব ফেরত প্রবাসী যুবক বাচ্চু মিয়া। শখ করে এ কুলের চাষ করেছেন। কিন্তু শখের এ কাশ্মীরি কুল চাষে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এ কুলের রং যে কাউকে আকৃষ্ট করবে। প্রতিদিন আশপাশসহ অন্যান্য এলাকার উৎসুক জনতা কাশ্মীরি কুল দেখতে ওই বাগানে ভিড় করছেন। আবার অনেকে পরামর্শ নিয়ে চাষও শুরু করছেন। জানা যায়, এ জাতের কুল কাশ্মীরে চাষাবাদ হয়ে থাকে। বছরখানেক আগে বাংলাদেশের কয়েকটি এলাকায়ও চাষ শুরু হয় কাশ্মীরি জাতের কুল। আকর্ষণীয় বর্ণের, খেতে সুস্বাদু ও আকারে বড় হওয়ায় এর কদর অনেক বেশি। এ জাতের কুল চাষ করে অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়। তাই অনেক সৌখিন চাষিই বাণিজ্যিকভাবে কাশ্মীরি জাতের কুল চাষে ঝুঁকছেন। চারা রোপণের ১০ মাস পরই চারাগুলো পরিপক্কতা পেয়েছে। ৫ থেকে ৭ ফুট উচ্চতার গাছগুলোর অংশ জুড়েই থোকায় থোকায় কুল আর কুল। প্রতিটি গাছে ব্যাপক পরিমাণে কুল ধরেছে। কুলের আকৃতিও বেশ বড়। এসব কুলের ভারে গাছের ডালগুলো নুয়ে পড়ছে। ২২০ শতক জমির বাগানে ৬০০টি গাছ রয়েছে। এ বাগানটি করতে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ কেজি করে কুল পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজার দরও বেশ ভালো। প্রতি কেজি কাশ্মীরি কুল ১০০ থেকে ১২০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। ওই বাগানের মালিক বাচ্চু মিয়া জানান, তিনি বগুড়ার মফিজ উদ্দিন এর সহযোগিতায় তিনি গাছের চারা এনে রোপন করেছিলেন। শখ থেকে বাগান করলেও এখন তা বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। এতে তিনি বেশ লাভবান হবেন ।
কৃষক বাচ্চু মিয়া আরও জানান, গাছগুলো একবার পরিপক্ক হয়ে উঠলে ১০বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। তার এই বাগানে ৭-৮জন লোক দিনরাত পরিচর্যা রয়েছে। তবে চারা রোপণের আগে শঙ্কিত ছিলেন, এই এলাকার মাটিতে এই কুল উৎপাদন নিয়ে। এই মাটিতে কাশ্মীরি নূরানী আপেল আবাদের উপযোগী বলে মনে করেন বাচ্চু। তবে তার দুঃখ- ‘এই উদ্যোগে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার তেমন সহযোগীতা পাননি।’ মাধবপুর উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান,নতুন জাতের এই কাশ্মীরি নুরানী আপেল কুল চাষে এই এলাকায় প্রাথমিক ভাবে সাফল্য পাওয়া গেছে। এই ফল রোপণ ও চাষের জন্যে কেউ সহযোগিতা চাইলে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সর্বাত্নক সহযোগীতা করা হবে।