ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আর নেই

Share the post

না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যৈষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক (৮৫)। শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এ প্রবীণ আইনজীবী।ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুর তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন আদ-দ্বীন হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাহিদ ইয়াসমিন।তিনি জানান, গত ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হককে আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৭ অক্টোবর)তিনি কিছুটা সুস্থবোধ করলে সকালের দিকে রিলিজ নিয়ে বাসায় ফিরে যান। কিন্তু বাসায় ফেরার পরপরই ফের তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। রক্তশূন্যতা, ইউরিন সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছেন তিনি। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক স্যার লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি। স্যারের অবস্থা মঙ্গলবার রাত থেকে খারাপের দিকে যায়। অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানে আছেন। পরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল ছিল।

জানা গেছে, রক্তশূণ্যতা, ইউরিন সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন ব্যারিস্টার রফিক। তিনি ডাক্তার রিচমন্ড রোল্যান্ড গোমেজের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

রফিক-উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। তার বাল্যকাল কেটেছে কলকাতার চেতলায়। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে ব্যারিস্টারি পাস করে তৎকালীন পাকিস্তানের নাগরিক হয়ে চলে আসেন ঢাকায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফৌজদারী আইনে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।

সফলতার অনেক গল্পই আছে ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনি লড়াই বিপুল পরিচিতি এনে দেয় তাকে। ওয়ান ইলেভেনের সময় রাজনীতিবিদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তাদের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতেও দ্বিধা করেননি তিনি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সঙ্গেও কাজ করেছেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। স্বাধীন বাংলাদেশের সূচনা লগ্নে আইন প্রণয়নে তারও ভূমিকা ছিল। ১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রফিক-উল হক। কিন্তু কোনো সম্মানী নেননি তিনি।পেশাগত জীবনে সফল এই মানুষটি অর্থ, বিত্তবৈভবের প্রতি মোহ ছিল না মোটেই। বিলিয়েছেন অর্থ মানুষের সেবায়। গড়েছেন হাসপাতাল। যুক্ত ছিলেন অসংখ্য সেবামূলক ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।

উজ্জ্বল ব্যতিক্রমের উদাহরন রেখে চলে গেলেন তিনি। তবে মানুষের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার যে মশাল জ্বালিয়ে গেলেন তা আলো দেবে আগামীর মানুষকে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

ভারতে ইলিশ রপ্তানি হবে, উপহার হিসেবে নয় : উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

Share the post

Share the postভারতে ইলিশ রপ্তানি হবে, উপহার হিসেবে নয় বলে মন্তব্য করছ্নে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর)  নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর রেগুলেটর এলাকা পরিদর্শন শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান । উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইলিশ এখনো যায়নি। শুধু  রপ্তানি বিষয়ে […]

K English Nest Canada স্কুলের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান

Share the post

Share the postবাচ্চাদের Native Speaker এর মতো করে ইংরেজিতে কথা বলা শেখানোর জন্যে প্রথম ২০১৮ সালে গড়ে তুলেছিলাম Kids Club. সেই সময় বাচ্চা এবং অভিভাবকদের অসীম আগ্রহ, আমাকে উৎসাহিত করেছে এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে। ২০২২ সালে কানাডা যাওয়ার পর এবং সেখানে স্কুলে কাজ করার মাধ্যমে Native Speaker এর মতো কথা বলার গুরুত্ব আরও বুঝতে পারলাম। […]