করোনায় তামাক নিষিদ্ধের দাবিতে চট্টগ্রামেও ক্যাম্পেইন-প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ
ডেস্ক নিউজ :করোনা মহামারীতে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে তামাকের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁঁকি এবং এটি সংক্রমণ সহায়ক এই বিবেচনায় সারাদেশের মতো সকল তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট নাগরিকরা। সেই সাথে গত ৭ থেকে ৯ মে পর্যন্ত চলমান এস এম এস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে এস এম এস ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো । চট্টগ্রামে এই কার্যক্রম পরিচালনা করছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব থিয়েটার আর্টস (বিটা), কনজুমার এডোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), ইলমা এবং বন্ধুপ্রতিম সংগঠন ইপসা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ ইনস্টিউট অব থিয়েটার আর্টস ( বিটা) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বিশিষ্টজনদের মধ্যে রয়েছেন বিটার নির্বাহী পরিচালক শিশির দত্ত, কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সেন্ট্রাল ভাইস প্রেসিডেন্টে নাজের হোসাইন, সমাজকর্মী জেসমিন সুলতানা পারু, প্রফেসর এ বি এম আবুন নোমান, ডিন, ল ফ্যাকাল্টি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, প্রফেসর ড. আনোয়ারা আলম, শিমুল শর্মা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, কক্সবাজার সদর, মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, মোহাম্মদ নাসিরুল হক, প্রাক্তন সভাপতি, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রফেসর ড. গণেশ চন্দ্র রায়, সভাপতি বাংলাদেশ উদীচী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, এড. মোয়াজ্জেম হোসাইন, লোকাল গভ. লিডার (এলজিপি), জয়েন ডিসট্রিক্ট কোর্ট, পটিয়া, সাংবাদিক ড. সৈয়দ আব্দুল ওয়াজেদ, আসুতোষ ভট্টাচার্য সুমন, ফিল্ম কোর. কানু কুমার দাশ, সহকারী অধ্যাপক, আর্কিটেক্ট এন্ড প্ল্যানার ডিপার্টমেন্ট, চুয়েট প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। চিঠিতে বিশিষ্টজনেরা উল্লেখ করেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসাসেবা প্রদানে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, তামাক ব্যবহারের কারণে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়া তামাকজাত দ্রব্য ফুসফুসের সংক্রমণ ও অসুস্থতা বাড়ায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়, যা করোনা সংক্রমণের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই সতর্কতা আমলে নিয়ে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বতসোয়ানা ইতোমধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে এই বৈশ্বিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর অনুরোধ জানান। চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। বর্তমানে দেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজ বাড়িতেই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়। এই বিপুল জনগোষ্ঠী বর্তমানে মারাত্মকভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ ধরণের রোগীর চিকিৎসায় অনেক সময় কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থার দরকার হয় এবং রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামাদির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সুতরাং এই মহামারির মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর মারাত্মকভাবে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে এবং এতে করোনাভাইরাস সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে মহামারি চলাকালীন জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।