“মানবের প্রতিচ্ছবি”
মানুষ,তুমি নোংরা কতো, আয়না দেখো এবার; করোনার এই মহামারি- চক্ষু খুলে সবার। আলসে তুমি হাত ধোয়াতে, আঙুল নাকে-চোখে; নগ্নহাঁচি-কাশি শেষে- হস্ত চলাও মুখে। শিরায় শিরায় ইতর তুমি মুখোশ দিয়ে ঢাকো; হস্তে রেখে সস্তে জিনিস, ডেটল-সাবান মাখো। মরম ভরা তপ্ত গরল, ঠোঁটে বিষের ধারা; দুঃখীর ডাকে বধির তুমি, নৃত্যে পাগল পারা। সকাল-সন্ধ্যা নিচ্ছো এখন, পরিষ্কারের তালিম; ধ্বংসকারী-শোষক তুমি, চূড়ান্ত এক জালিম। সব ক্রিয়ারই আছে ধরায়, সমান প্রতিক্রিয়া; পৃথিবীটা নিচ্ছে শোধ আজ, কাঁপছে কেন হিয়া? ভিতর তোমার আবর্জনা, বোধে তুমি ক্লীব; সকল প্রাণী হননকারী, আত্মঘাতী জীব। হিংসা তোমার মরমজুড়ে, ঘৃণায় তুমি কাবু; ভোগের বেলায় সর্বভুক আর পেটভর্তি হাগু। চামড়া ঘেরা গ্যাসের বেলুন, মগজ ভরা ইগু; ঈর্ষা ভরা বামুন আবার উগ্রবাদী ছাগু। সাদা-কালোয় বিভেদ গড়ো, কাঁটাতারের দেয়াল; ধর্মের নামে অস্ত্র চালাও, লেঙ্গুড় কাটা শিয়াল। ফিলিস্তিন আর আফগানিস্তান- রোষানলে পুড়ে; কাশ্মীর ও আরাকানে দিচ্ছো আগুন ঢেলে। সৃষ্টির সেরা দাবি তোমার- পশুর অধম কাজে; কামান-গোলার ঝলকানিতে বিউগল কানে বাজে। পাগড়ি মাথায়-জোব্বা গায়ে, মরুভূমির শেখ; ইয়েমেন-কাতার বিনাশ করে জাহেল হলে ফের। শক্তের তুমি ভক্ত চরম- শক্তিহীনের যম; নাজিল হলে খোদার গজব- বন্ধ হবে দম। বুঝবে তুমি সরবে যখন- পায়ের তলার মাটি; দুঃখদাহে করলে গাহন- হইবে তবে খাঁটি। সবুজ ধরা মরু করে, রাঙলে আকাশ ধূসর; বন্ধু নাতো- ধরিত্রীর তুই, মস্ত লোভী দোসর। মানুষ হয়েও বেহুশ তুমি, বিপথগামী আদম; পৃথিবীটা নষ্ট করে- জুতোয় ঢাকো কদম। লজ্জা তোমার নেইকো বরং দম্ভ আকাশছোঁয়া; ভাবছো তুমি এই পৃথিবী- ছেলের হাতের মোয়া? উপর সাদা, ভেতর ফাঁকা- উন্মোচিত মুখোশ; জীবাণুতেই ব্যর্থ, এখন নীরব-নিরস-খামোশ। আর্তের ডাকে অন্ধ তুমি, বন্ধ তোমার মুখ; বন্দিদশার শিকল পায়ে- হারাম এবার সুখ। ঢাকলে কেবল দেহ ওরে, হয়কি লাজের বারণ; মাতাল বিবেক না জাগিলেই অশুদ্ধতার কারণ। মুখোশে কেবল ঘুচবে না আজ তোমার অপরাধ; আলোর ধরা করলে আঁধার- বাড়বে কেবল রাত। মনে রেখো, এই পৃথিবী- সকল প্রাণীর সমান; কোভিড নামের মহামারি দিচ্ছে তারই প্রমাণ।। লেখক:: মোঃ রেজাউল করিম রাজ প্রভাষক আইন বিভাগ লিডিং ইউনিভার্সিটি ,সিলেট।