দুর্গাপুর সীমান্ত দিয়ে ৩২ বাংলাদেশীকে ঠেলে দিলো বিএসএফের
তোবারক হোসেন খোকন দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি:নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী উপজেলা দুর্গাপুরের বিজয়পুর বিওপি’র (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্তে মেইন পিলার ১১৪৮নং ও ১১৪৯নং এর মধ্যবর্তী জঙ্গল এলাকা দিয়ে ভারতের বাগমারা ক্যাম্পের ব্যাটালিয়নের (বিএসএফ) সদস্যরা ৩২জন বাংলাদেশী নাগরিককে পুশইন করেছে। বুধবার (৪ জুন) ভোর রাত ৩টার দিকে বিএসএফ কর্তৃক ৩২ জন পুশইনে মধ্যে রয়েছেন নয়জন পুরুষ, ২২ জন মহিলা ও একজন শিশু। অপরদিকে বুধবার (৪ জুন) সকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিরিশিরি বাসষ্ট্যান্ড থেকে ৫জন মহিলা ও ৩জন পুরুষ কে আটক করে দুর্গাপুর থানায় হস্তান্তর করেছে।
৩২ জন পুশইনের মধ্যে মো. রমজান আলী (১৮), নুর ইসলাম সরদার (৪২), আলম সরদার (১৮), মিরাজগাজী (২৩), রোজিনা বানু (৩৫), ছামিরা গাজি (১৪), সিরাজ গাজী (২২), ফনুফা (২০), মাসুদ সরদার (৯), মরিয়ম (১২) ও নাসরিন বেগম (৩২)। খুলনা জেলার বৈইটাঘাটনা থানাধীন মো. শাকিল ইজাদ্দার (২২), মোসা. সোনিয়া (১৯) ও হালিমা ইজ্জাদার (০২) এবং একই জেলার রূপসা থানাধীন মোসা. কবিতা খাতুন (২০), মোসা. এলিনা বেগম (৩০)। তিনজন করে বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার। তারা হলেন- বাগেরহাটের রামপাল থানাধীন মোসা. হাসনা খাতুন (২৫), মংলা থানাধীন মোসা. মাহমুদা বেগম (২৮) ও কচুয়া থানাধীন ইভা শেখ (১৮)। সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া ধানাধীন মোসা. টুম্পা খাতুন (২২), মোসা. সায়েরা খাতুন (৩০) ও আসমা খাতুন (২৮) এবং যশোর জেলার মনিরামপুর থানাধীন মোসা. তানিয়া খাতুন (২৬), মোসা রেখা খাতুন (২৬) ও ঝিকরগাছা থানাধীন মোসাঃ পরভিনা শেখ (৩০)।
ঢাকা জেলার দুজন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন ফাতেমা (২৫) ও ডেমরা থানাধীন রিতা আক্তার (৩০)। এছাড়া একজন করে রয়েছেন দিনাজপুরের কোতোয়ালী থানাধীন মো. জাকারিয়া (৩০), টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানাধীন, মোসা. সাবিনা বেগম (৩৫), শেরপুরের নকলা থানাধীন মো. মনঞ্জুরুল ইসলাম (৩৭), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানাধীন জাহানারা বেগম (৪০) এবং জামালপুরের মেলান্দহ থানাধীন জুথি আক্তার (১৭)।
পুশইন হওয়া সাতক্ষিরা জেলার বাসিন্দা টুম্পা খাতুন জানান, সাত মাস আগে দালালের মাধ্যমে ভারতে গার্মেন্টসে সেলাই কাজ করার জন্য অনুপ্রবেশ করেছিলেন। সেখানে গার্মেন্টস এর কাজ না পেয়ে বাসা বাড়িতে ধোঁয়া মোছার কাজ করছেন। গত ২২ দিন আগে তাকে ওই বাসা থেকে আটক করে নেয় ভারতীয় পুলিশ। এতদিন আটকে রেখে পরে বিমানে দেশে পাঠানোর কথা বলে আমাদের সাথে থাকা টাকা পয়সা, মোবাইল ফোন, গলার চেইন, জামা-কাপড় গুলো রেখে দেয়। আমরা মুসলিম বলে আমাদের গালি-গালাজ করে সবাইকে বেদম মারধর করে ৩দিন না খাওয়াইয়া রাখে। পরবর্তিতে গতকাল (৪ মে) রাতের আঁধারে বাংলাদেশে পুশইন করে দেয়।
বিজিবি’র নেত্রকোনা ব্যাটালিয়নের (৩১ বিজিবি) সহকারি পরিচালক মো. আব্দুল আওয়াল এসব তথ্য নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, টাঙ্গাইল, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর নড়াইল, ঢাকা, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, শেরপুর ও দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায়। তাদেরকে দুর্গাপুর থানায় হন্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।