রাজশাহী থেকে হাবীব জুয়েল: রাজশাহী তানোর গোদাগাড়ী ১ আসনের বিতর্কিত অন্যতম এমপির নাম ফারুক চৌধুরী। যাকে নিয়ে একাধিক জাতীয় ও শীর্ষ গণমাধ্যমগুলোতে একাধিক অনুসন্ধানী প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। চাষির টাকা থেকে শুরু করে শিল্পপতির টাকা, ধর্ষণ থেকে শুরু করে মাদকের টাকা এমন কোন সেক্টর নাই যে যেখানে সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর ছোবল পড়েনি। বিশেষত তানোর গোদাগাড়ী অঞ্চলের আদিবাসীদের দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করিয়েছেন ভূমিদস্যতা। আর এই ভূমিদস্য অন্য কেউ নয় তার অন্যতম সহযোগী হলেন আদিবাসী কৃষক লীগ নেতা হুরেন মুর্মু। কিন্তু জনগণে প্রশ্ন উঠেছে কে এই হুরেন মূর্মু, কোথায় রয়েছেন হুরেন মূর্মু, সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর সাথে আছেন নাকি ইন্ডিয়া পালিয়ে গেছেন ? তবে বিশ্বস্ত কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, হরেন মুর্মু রাজশাহীতেই অবস্থান করছেন। আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কে এই হুরেন মূর্মু কি তার পরিচয়? কিভাবে ১০ বছরে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ মনে গেছেন এই হরেন মুর্ম। রাজশাহী গোদাগাড়ীতে আদিবাসীর ট্যাগ লাগিয়ে সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর ডান হাত হুরেন মূর্মু ও তার পরিবার দখল করে চলেছেন বিঘার পর বিঘা জমি। কখনো দখল করে নেন মুসলমানদের জমি, আবার কখনো এতিমের জমি কিংবা কখনো প্রতিবন্ধীর জন্য। বিষয়টা অনেকটা এমন, তারা আওয়ামী লীগ এবং আদিবাসী বলেই তাদের জন্য সব কিছুই হালাল। শুধু তাই না ক্ষমতা ও টাকার জোরে ২০২৪ সালের গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে দাঁড়িয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন হুরেন। কিন্তু এরই মধ্যে সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর ক্ষমতা খাটিয়ে হুরেন মূর্মু ও তার আপন ৩ ভাই বিরেন, নিরেন, রুবেল, খুবেন রাজশাহী গোদাগাড়ী থানাধীন কুন্দুলিয়া এলাকায় জোর পূর্বক মুসলমানদের জায়গা ও রাস্তা দখল করে বছর দশেক আগে থেকে বসবাস শুরু করেছেন । বিধায় উক্ত জমিগুলোর যারা প্রকৃত মালিক তারা তাদের জায়গা বুঝে পাচ্ছেন না। তবে ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বারংবার। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার করে হুরের মুর্মু সেই সকল অভিযোগলো দমিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।
তবে সরেজমিন অনুসন্ধান চালিয়ে এবং গোদাগাড়ী ভূমি অফিসের তথ্য অনুযায়ী হুরেন মূর্মু ও তার পরিবারের সকল সদস্য যে জায়গায় জোরপূর্বক বসবাস করছেন সেই জায়গার প্রকৃত মালিক – রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার মিজানুর রহমান, রাজিব হোসেন, মাহাবুল আলম, রাজিব হোসেন, বুলবুলি, মনোয়ার হোসেন ও মৃত জরিনা বিবি। আরোও উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বে কুন্দুলিয়ার ঐ জমির জাল দলিল তৈরি করে জেল খেটেছেন হুরেন মূর্মুর অন্যান্য ভাইয়েরা। এদিকে রাস্তা ও জমির প্রকৃত মালিকদের অন্যতম অংশীদার মাহাবুল আলম বলেন – হুরেন মূর্মুরা ৪ ভাই আমাদের জায়গা ও রাস্তা দখল করে আছে ২ যুগের অধিক সময় ধরে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে এসিল্যান্ড অফিসে অভিযোগ দিলেও তারা সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর সহযোগিতা নিয়ে এসিল্যান্ড অফিসে বিচারিক দিবসে হাজির হয়নি। পরবর্তীতে আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ও মেম্বারের সহযোগিতা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ জমা দায়ের করলেও তারা সেখানে উপস্থিত হয়নি। উল্লেখিত জায়গায় আর এক শরিক মনোয়ার হোসেন – যেহেতু তারা আদিবাসী আমরা তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। বিধায় ওরে মুর্মুর পরিবারকে আমরা সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে বসে সরাসরি জানিয়েছি আমরা আপনাদের বসবাসের জন্য ৫ কাঠা জায়গা দিচ্ছে, চলাচলের জন্য রাস্তা দিচ্ছি এবং একটি মন্দিরের জন্য এক কাঠা জায়গা দিচ্ছি কিন্তু তারপরও তারা উক্ত জায়গা থেকে কিছুতেই পিছু হচ্ছে না। শুধু তাই নয় তারা একটি জাল দলিলও তৈরি করেছে। দলিল নং ৪১ ৬৬১ /৭৬ তারিখ – ৩০/১২/১৯৭৬। যে দলিল পরবর্তীতে আদালতে ও এসিল্যান্ড অফিসে জাল বলে প্রমাণিত হয়। সার্বিক বিষয়ে কথা বলার জন্য রাজশাহী গোদাগাড়ীর এসিল্যান্ডের সাথে সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান – আপনারা অবগত আছেন দেশে এখন সংস্কার চলছে বিধায় যারা জোর জুলুম করে মানুষের সম্পত্তি জবরদখল করে রেখেছে কেউ অভিযোগ দিলে আমরা তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
এছাড়াও হরেন মুর্মুর নামে নামে যে সকল অভিযোগ রয়েছে তার নিম্ন তুলে ধরা হলো –

আদিবাসীদের নাম দিয়ে বিঘার পর বিঘা সম্পত্তি দখল।

গোদাগাড়ীর কাকনহাটে সন্ত্রাস নৈরাজ কায়েম।

সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর রাইট হ্যান্ড।

গোদাগাড়ী অঞ্চলের আন্ডার ওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ।

নামে বেনামে রাজশাহীতে শত কোটি টাকার সম্পত্তি।
অন্যদিকে সংবাদ প্রকাশের সার্থে সার্বিক বিষয়ে আদিবাসী কৃষক লীগ নেতা হরেন মূর্মুর সাথে মুঠোফোনে বারংবার ফোন দিয়ে যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি তার মুঠোফোনে মেসেজ দিলেও তিনি কোন রিপ্লাই করেননি। তবে রাজশাহীর সুশীল সমাজসহ অভিজ্ঞ মহল সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ বলছেন – এখনই যদি এই সকল মাদক মাফিয়া কিংবা এই ধরনের ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না করা হয় তবে ভবিষ্যতে এরা নতুন করে নতুন কোন দলে যোগদান করে মুসলিমদের জমি দখলের প্রতিযোগিতায় নামবে।