ফাঁসির রায় শুনে আসামি বললেন ‘আলহামদুলিল্লাহ’

Share the post

রাজধানীর কলাবাগানে জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয়কে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আট আসামির মধ্যে ছয় জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকি দুই জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এসময় আদালত প্রাঙ্গনে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা শুনে আসামিদের হাসতে হাসতে বলতে শোনা যায়, রায়ে আমরা আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের কোনো অনুশোচনা নেই। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল জিয়া, আকরাম হোসেন, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ। একইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ে খালাস পাওয়া দুই জন হলেন- সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও মওলানা জুনায়েদ আহম্মেদ। আদালতে উপস্থিত থেকে রায় শুনেছেন মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ ওরফে শামস, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ।

রায় ঘোষণার সময় চার আসামিকেই আদালতে হাসাহাসি করতে দেখা যায়। রায় শোনার পরও বেপরোয়া ছিল তাদের মনোভাব। আরাফাত বলেন, ‘এই তাগুতি বিচার ব্যবস্থা আমাদের পায়ের নিচে।’ আসাদুল্লাহ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। এই রায়ে আমরা সফল। আমরা আখেরাতে সফল হব।’

বেলা ১২টার টার দিকে প্রিজন ভ্যান থেকে নামানোর সময়ই মুখে হাসি নিয়ে নামছিলেন চার জন। আদালতে ঢোকা থেকে রায় ঘোষনা শেষে আবার প্রিজন ভ্যানে ওঠানোর সময় পর্যন্ত তাদের মুখে হাসি দেখা যায়। কাঠগড়ায় থাকা অবস্থায় হাতকড়া পরিয়ে রাখা নিয়ে প্রশ্ন করলেন জঙ্গিরা। জঙ্গি আব্দুল্লাহকে দেখা যায় হাত পিছনে দিয়ে হাতকড়া পরানো অবস্থায়। তখন তিনি সেটা খুলে দিতে বলেন। কিন্তু পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে খুলতে রাজি না হলে জঙ্গি আরাফাত উত্তেজিত হয়ে পুলিশের উদ্দেশ্য বলেন, ‘জঙ্গিদের কি কোনো মানবাধিকার নেই। মানবাধিকার কি শুধু আপনাদের জন্য। আপনারাই মানবাধিকারের কথা বলেন, আমরা বলি না।’

উল্লেখ্য, রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডে ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল খুনের শিকার হন ইউএসএইড কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘হত্যায় অংশগ্রহণকারী অভিযুক্ত আসামিরা বেঁচে থাকলে আনসার আল ইসলামের বিচারের বাইরে থাকা সদস্যরা একই অপরাধ করতে উৎসাহিত হবে। কাজেই এসব আসামি কোনো সহানুভূতি পেতে পারে না। ছয় আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। এতে নিহত ব্যক্তিদের আত্মীয়রা শান্তি পাবেন। অন্যদিকে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করতে ভয় পাবে এবং নিরুৎসাহিত হবে।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

নেত্রকোনায় বিকাশকর্মী রিজনের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন

Share the post

Share the postসোহেল খান দুর্জয়,নেত্রকোনা : নেত্রকোনায় বিকাশকর্মী রিজন তালুকদারের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা প্রেসক্লাবের সামনে নেত্রকোনা বিকাশসহ সব কটি মোবাইল ব্যাংকিং কর্মী ও সচেতন নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী এই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা বিকাশের ব্যবস্থাপক ধ্রুব সরকার, […]

বিজয়নগরে ২ পক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্ধ শতাধিক

Share the post

Share the postমাহমুদুল হাসান,স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম বিভাগঃফেসবুকে কথা কাটাকাটি জেরে দুই গোষ্ঠীর আধিপত্য নিয়ে বিজয়নগর উপজেলায় ঘন্টাব্যাপী মারামারিতে অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছে। ১৬ আগষ্ট শনিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত এই মারামারিতে উভয় পক্ষের অর্ধ শতাধিক আহত হয়। তাত্ক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন […]