নারী পুলিশ সদস্যের গোপন ভিডিও ভাইরাল, রিমান্ডে হৃদয় খান
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটস অ্যাপে গ্রুপ খুলে নারী কনস্টেবলের গোপন ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় গ্রেফতার হৃদয় খানকে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
শুক্রবার (৪ জুন) বিকেলে তাকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুর নাহার ইয়াসমিন এর আদালতে হাজির করে পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে বিচারক এ আদেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারী কনস্টেবল বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় হৃদয় খানকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেন। সকালে সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার সাইনবোর্ড এলাকা থেকে পুলিশ আসামি হৃদয় খানকে গ্রেফতার করে।
মামলার বাদী নারী পুলিশ সদস্য নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চাঁনমারী এলাকার বাসিন্দা। তিনি কক্সবাজার জেলা পুলিশ লাইন্সে এসএএফ শাখায় কনস্টেবল পদে কর্মরত আছেন।
মামলার এজাহারে ওই নারী পুলিশ সদস্য উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত হৃদয় খানের বাড়ি ঢাকার মগবাজার এলাকায়। হৃদয় তার আত্মীয় এবং তাদের মধ্যে দুই বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। সেই সুবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে হৃদয়ের সাথে ভিডিও কলে তার নিয়মিত যোগাযোগ হতো। হৃদয় তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার সাথে বিভিন্ন কথোপকথন ও আপত্তিকর নানান অশ্লীল ভিডিও আদান-প্রদান করে, যা হৃদয় তার মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করে রাখে।
মামলার এজাহারে ওই নারী পুলিশ সদস্য আরও অভিযোগ করেন, হৃদয় তার অজান্তে তার সাথে কাটানো একান্ত অন্তরঙ্গ সময়ের কিছু ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করেছিল। পরে তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়ন শুরু হলে হৃদয় তার ব্যক্তিগত জি-মেইল এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
সেখান থেকে মোবাইল ফোনের যাবতীয় নম্বর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের তথ্য সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে হৃদয় কৌশলে বিভিন্ন পুলিশ সদস্যদের মোবাইল নম্বর দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ‘বিডি পুলিশ’ নামে একটি গ্রুপ খুলে সেখানে ওইসব আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি আপলোড দিলে তা ভাইরাল হয়। এতে সামাজিকভাবে ও কর্মস্থলে মান সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে ওই নারী পুলিশ সদস্য দাবি করেন।
মামলার এজাহারে এ বিষয়ে ওই নারী পুলিশ সদস্য আরও উল্লেখ করেন, গত ২ জুন বুধবার ছুটি পেয়ে কক্সবাজার থেকে তিনি নারায়ণগঞ্জের বাড়িতে আসেন। ৩ জুন বৃহস্পতিবার সকাল নয়টায় হোয়াটসঅ্যাপ চালু করে দেখেন ‘বিডি পুলিশ’ নামে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে হৃদয় তাদের গোপন অশ্লীল আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে। পরে তিনি পরিবারের সদস্য ও কর্মস্থলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে থানায় গিয়ে আইনের সহায়তা চান।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান, নারী কনস্টেবলের মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়া পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান জেলা পুলিশ সুপার।