মেয়রের ডাকে জঙ্গি-মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শপথ নেবেন লক্ষ মানুষ

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের ডাকে সাড়া দিয়ে আগামি বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদিঘী ময়দানে জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শপথ নিতে প্রস্তত হয়েছেন চট্টগ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। মেয়র নাছির নিজেই মহাসমাবেশে উপস্থিত হয়ে ব্যতিক্রমী এই শপথবাক্য পাঠ করাবেন। তাই এ নিয়ে নগরজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আগ্রহ, উৎসাহ-উদ্দীপনা।
ধারণা করা হচ্ছে, লক্ষাধিক মানুষ লালদিঘী ময়দানে উপস্থিত হয়ে জঙ্গি, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতিকে সমস্বরে ‘না’ বলবেন। মহাসমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সমাবেশস্থলে মঞ্চ ও তোরণ নির্মাণ, সাজসজ্জার কাজ শেষ হয়েছে। মেয়র নাছির নিজেই মহাসমাবেশের আদ্যোপান্ত মনিটরিং করছেন, লালদিঘী মাঠ পরিদর্শন ও সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছেন।
এদিকে, গত দুদিন ধরে নগরের প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও ৪১টি ওয়ার্ডে চলছে মাইকিং, নানামুখি প্রচার-প্রচারণা। প্রতিটি ওয়ার্ডে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন গঠিত ‘জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিবিরোধী কমিটি’র নেতৃবৃন্দ মহাসমাবেশ সফল করতে মিটিং, মিছিল ও উদ্বুদ্ধকরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিকে না বলুন, নিরাপদ বাসযোগ্য চট্টগ্রাম গড়ুন’- মেয়রের এই আহ্বানে নগরজুড়ে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। নগরের সর্বস্তরের মানুষ এই কর্মসূচিকে স্বাগত জানাচ্ছেন, সমর্থন দিচ্ছেন। মহাসমাবেশ আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউজ একুশে পত্রিকাকে বলেন, বৃহস্পতিবারের মহাসমাবেশ মাননীয় আ জ ম নাছির উদ্দীনের দীর্ঘ প্রচেষ্টা, প্রক্রিয়া ও প্রস্তুতির ফল। ২০১৭ সাল থেকে তিনি নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে শক্তিশালী কমিটি গঠন ও পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে সমাবেশ করে গণসচেতনতা তৈরি করেছেন। এসব সমাবেশে পাড়ায় পাড়ায় গণসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি অপরাধীদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অনুরোধ ও ক্ষেত্রবিশেষে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় মেয়র মহোদায়ের ডাকে বৃহস্পতিবারের মহাসমাবেশ ও শপথ অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবারের মহাসমাবেশে ২০ হাজার নারীসহ লক্ষাধিক মানুষের সমাগমের আশা প্রকাশ করে সিটি করপোরেশন শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল হক ডিউক বলেন, মহাসমাবেশে উপচেপড়া লোক সমাগম হবে। লালদিঘী মাঠ ছাড়িয়ে কোতোয়ালী, নিউমার্কেট মোড়, আন্দরকিল্লা, সিনেমা প্যালেস ছাড়িয়ে যেতে পারে লোকসমাগম। এটিই চট্টগ্রামের স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী সমাবেশ বলে জানান ডিউক।

সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন একুশে পত্রিকাকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বপ্রের ঠিকানায় পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি আমরা। সার্বিক সূচকে প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান থেকেও বাংলাদেশ এগিয়ে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০২১ ও রূপকল্প ৪১ বাস্তবায়নে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
আর এক্ষেত্রে বড় বাধা জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসব অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। তাঁর সাহসী কাফেলায় শরীক হয়ে তাঁর একজন কর্মী হিসেবে চট্টগ্রাম থেকে আমিই শুরু করেছি আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ, ব্যতিক্রমী কর্মসূচি। আগামি বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামবাসী একযোগে এসব অপরাধকে ‘না’ বলবেন এবং জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত নিরাপদ চট্টগ্রাম গড়ার শপথ নেবেন।-বলেন মেয়র আ জ ম নাছির।