৭ মার্চের ভাষণে সশস্ত্র যুদ্ধের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু

Share the post

২৩ বছরের ইতিহাস তুলে ধরে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণই ছিলো প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা। বঙ্গবন্ধু এই ভাষণেই স্বাধীনতা যুদ্ধের সব নির্দেশনা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।রোববার বিকেলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে অনলাইনে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ এক সময় বাংলাদেশেই নিষিদ্ধ ছিলো। কিন্তু এখন জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়ে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করেছে।
ইতিহাস কখনো মুছে ফেলা যায় না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ভাষণের মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধু শুধু মুক্তির নির্দেশনাই দেননি, নিজের জীবনও উৎস্বর্গ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ মার্চের সুবর্ণ জয়ন্তীতে এসে দাড়িয়েছি।কিন্তু এখনো আমার কাছে মনে এতো সেদিনের ঘটনা। এভাষণ কোনো লিখিত ভাষণ নয়। এ ভাষণ ছিলো তার সমগ্র জীবনের সকল সংগ্রামের অভিজ্ঞতা এবং বাঙ্গালী জাতিকে নিয়ে যে লক্ষ্য, সেই লক্ষ্য স্থির করেই তিনি এ বক্তব্য রাখেন।আর এ বক্তব্যর পরামর্শ দিয়েছিলেন আমার মা।

সেদিন অনেক ছাত্রনেতা, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ নানা পরামর্শ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে এসেছিলেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে চাপও দিয়েছিলেন অনেকেই।

৭ মার্চের ভাষণে অন্য কারো কথা নয় নিজের কথা জনতার সামনে তুলে ধরার জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতি পরামর্শ ছিলো ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ যখন তিনি দিতে যাবেন তখন আমার মার বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ দেন, সারাটা জীবন সংগ্রাম করেছো তুমি, তোমার মনে যে কথা আছে সে কথায় তুমি বলে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যখন ভাষণ শুরু করেন তখন তিনি চোখের চশমাটা খুলে রেখে মনের কথাগুলোই বলেছেন।

৭ মার্চের ভাষণের তিনটি স্তর রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম স্তরে তিনি বাংলার শোষণ ও নির্যাতনের অতীত ইতিহাসের পটভূমি তুলে ধরেছেন, দ্বিতীয় স্তরে তৎতকালিন সময়ের ভোট, অধিকার, নির্যাতন ও বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছেন। তৃতীয় পর্যায়ে তিনি যুদ্ধের সকল নির্দেশনা দিয়েছেন। তার এ ভাষণে দুইবার বলেছেন, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ৭ মার্চ ছিলো প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা। এ ঘোষণার পর থেকে দেশের সকল কার্যক্রম থেকে শুরু করে ইয়াহিয়ার গণভবনের রান্না ঘর পর্যন্ত চলতো ধানমনন্ডির ৩২ নম্বরের বাসা থেকে দেয়া তার নির্দেশনায়।

শেখ হাসিনা বলেন, অসহযোগ আন্দোলনের পথ ধরে জাতিকে সশস্ত্র বিপ্লবের দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। পৃথিবীতে এমন সফলতার নজীর নেই। জাতির পিতা জীবনের একটি লক্ষ্য স্থির রেখে আন্দোলন সংগ্রাম করেন।পাকিস্তানের শাসকদের বিরুদ্ধে ১৯৪৮ সাল থেকেই আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা এতো অল্প সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণে জন সাধারণের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিলেন।

২৩ বছরের ইতিহাস তুলে ধরে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণই মূলত ছিলো প্রকৃত স্বাধীনতার ডাক।বাঙালীরা যেহেতু পাকিস্তানিদের দ্বারা আগো আক্রান্ত হয়েছে আগেও সেহেতু আন্তর্জাতিক সমর্থন পেতে অসুবিধা হয়নি।

পাকিস্তানের শাসকরা বার বার হত্যা চেষ্টা করেও হত্যা করতে পারেনি। অথচ যে বাঙ্গালীকে একটি রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন, যে বাঙ্গালিকে একটি জাতি দিয়ে গেছেন তারাই তাকে হত্যা করেছে। একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মত অসামান্য অবদানের পরও জাতির পিতাকে হত্যা করা এ জাতির জন্য চরম দুর্ভাগ্যের।

শুধু হত্যা নয় ৭৫ পরবর্তী সময়ে এ ভাষণ অলিখিতভাবে বাজানো নিষদ্ধ ছিলো। কিন্তু এখন জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়ে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করেছে। সত্যকে কখনোই দাবিয়ে রাখা যায় না। যা উদ্ভাসিত হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

রাজশাহীর ধামরাই স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে সিফাত-আলমগীর

Share the post

Share the post সৈয়দ মাহিন ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :রাজশাহীতে অবস্থানরত সাভার-ধামরাই স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ২০২৫-২৬ সেশনের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি হিসেবে আরবী বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত সিফাত  এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের আলমগীর এইচ রানা নির্বাচিত হয়েছেন। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সংগঠনটির এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ […]

ওয়েব পোর্টাল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ইবির আইসিটি বিভাগে নবীনবরণ

Share the post

Share the postইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগ ও স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব আইসিটি (এসএআইসিটি)-এর উদ্যোগে নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় বিভাগের ওয়েব পোর্টালের উদ্বোধনও করা হয়। রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবনের ১০২ নং এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এসময় আইসিটি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে […]