লোহাগাড়ার দুই সহোদরের মৃত্যু : সংসারে আর রইল না কেউ উপার্জনের
সৌদি আরবের মদিনায় হারেচ মার্কেটের একটি সোফা কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৭জন নিহত হয়েছে।এদের মধ্যে দুই বাংলাদেশির বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ সুখছড়ি ৯নং ওয়ার্ডে শাম্বি পাড়া এলাকায়। তারা ওই এলাকার সুলতান আহমদের পুত্র।পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটাতে সৌদি আরব পাড়ি জমায় দুই ভাই। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে পরিবারটি ভেঙে পড়েছে তাদের মা-বাবা।
তারা হলেন মিজানুর রহমান ( ২৩), আরফাতুজ্জামান মানিক (১৮)। বাবা সোলতান আহমদ দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে সৌদি আরবে ছিলেন । গত ১০ মাস আগে দেশে চলে আসেন। বর্তমানে বাড়িতে থাকেন। পরিবারের মধ্যে তারা দুই ভাই দুই বোন। দুই বোন সবার বড়।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) সকালে দুই সহোদরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের দুই পুত্রের মৃত্যুর খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা – বাবা। এক সাথে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবরের বোনেরাও কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
পরিবারের বরাত দিয়ে নিহতের মামা প্রবাসী আবু তাহের সিটিজি টাইমসকে জানান, সংসারে সচ্ছলতা আনতে দুই বছর আগে আমার ভাগিনা মিজানকে সৌদি আরবের মদিনায় নিয়ে আসি।
পরবর্তীতে এক বছর পর তার ছোটভাই আরফাতুজ্জামান মানিককে নিয়ে আসি। মিজান সোফা কারখানায় কাজ করে৷ আরফাত আমার দোকানে প্রায় কাজ করত। করোনা চলাকালীন গত মার্চে দেশে চলে আসি। দোকানে ও আরফাতসহ আমার ছোটভাইকে রেখে আসি।
গত এক মাস আগে কফিল আমার দোকান নিয়ে নেয়। দোকান নেওয়ার পর আরফাত মিজানের কাছে চলে যায়৷ এর পর তারা দুই ভাই এক সাথে থাকতো।
তিনি আরো বলেন, গত ১০ বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টার দিকে মদিনা থেকে আমার ভাগিনা আবদুল হামিদের মাধ্যমে মুঠোফোনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর পাই আমরা।
এদিকে, তাদের মৃত্যুর খবর পরিবারের কাছে পৌঁছালে সদস্যদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ। স্বান্তনা জানাতে এগিয়ে এসেছেন আত্মীয় স্বজনসহ এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী দ্রুত দুই সহোদরের লাশ দেশে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। পাশাপাশি দুই সহোদরের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।