বিএসসি প্রকৌশলীদের বৈষম্য দূরীকরণে ইবিতে বিক্ষোভ

Share the post
সুবংকর রায়, ইবি প্রতিনিধি:ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ায় বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রতি বৈষম্য নিরসন ও তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ৩ দাবি উপস্থাপন করেন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘চব্বিশের বাংলায় বৈষম্যর ঠাঁই নাই’, ‘ডিপ্লোমা কোটা নিপাত যাক, প্রকৌশলীরা মুক্তি পাক’, ‘তুমি কে আমি কে, প্রকৌশলীরা প্রকৌশলী’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যেসব দাবি জানিয়েছেন সেগুলো হলো- প্রথমত, ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেড/অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার/সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবার জন্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং অবশ্যই বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। কোনো কোটা বা সমমান পদ তৈরি করে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া যাবে না। দ্বিতীয়ত, টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেড/ সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার/সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে, যাতে ডিপ্লোমা ও বিএসসি ডিগ্রিধারী উভয়েই চাকরির পরীক্ষায় সুযোগ পান। তৃতীয়ত, বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না। এ জন্য আইন পাস করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে। আইইবি অ্যাক্ট অনুযায়ী কেবল বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররাই প্রকৃত ‘ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে স্বীকৃত। এই শব্দের অপব্যবহার বন্ধ করা জনস্বার্থে জরুরি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দিনের পর দিন ডিপ্লোমা কোটার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশের প্রকৌশল খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা কিছু কাঠামোগত বৈষম্যের মাধ্যমে প্রকৌশলীদের অধিকার হরণ করা হচ্ছে। একজন বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলী কখনোই ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের সমান হতে পারেন না। এ বৈষম্যের ফলে দেশের প্রকৌশল ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার সংকট ও ন্যায্যতার অভাব তৈরি হচ্ছে। আমরা চাই প্রতিটি ক্ষেত্রে মেধার মূল্যায়ন হোক।
প্রকৌশল খাতে কোটা ব্যবস্থা প্রকৌশলীদের জন্য ন্যায্য প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করবে এবং দেশের প্রকৌশল খাতকে আরও শক্তিশালী করবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ১০ম গ্রেডে বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা আবেদনই করতে পারে না। প্রকৌশল খাতে নিয়োগ ও পদোন্নতি অবশ্যই মেধার ভিত্তিতে হওয়া উচিত, কোনো ধরনের কোটা বা বিশেষ সুবিধার মাধ্যমে নয়। কেউ যদি ৯ম গ্রেডে যেতে চান, তাহলে তাকে অবশ্যই পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার জানান দিয়েই আসতে হবে। ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের জন্য ৩৩ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে, তা অবশ্যই বাতিল করতে হবে এবং ৯ম গ্রেডে কোনোভাবেই ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের স্থান দেওয়া যাবে না। যত দিন পর্যন্ত আমাদের তিন দফা বাস্তবায়ন না হবে, তত দিন আমাদের আন্দোলন চলবে। এ ছাড়া সব পর্যায়ের বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান বক্তারা।
আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে অনেক প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৌশল বিভাগ আছে। এসব জায়গার শিক্ষার্থীরা দেশের জন্য কিছু করতে চায়। আমরা শুধু হাহুতাশ করি যে দেশ থেকে মেধা পাচার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের মতো প্রকৌশলী অনুষদের শিক্ষার্থীদের যদি পড়াশোনা শেষে দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ দেওয়া না হয়, তাহলে তো মেধা পাচার হবেই।
তিনি আরো বলেন, অযোগ্যদের এসব জায়গায় সুযোগ দিলে দেশের উন্নতি হবে না। এ ছাড়া ইবির ৫টি প্রকৌশল বিভাগকে আইইবির অ্যাক্রিডিয়েশনের আওতায় যাবতীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

ইবিতে বিশ্ব ডিএনএ দিবস উদযাপিত

Share the post

Share the postসুবংকর রায়, ইবি প্রতিনিধি :বর্ণাঢ্য আয়োজনে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অ্যামেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজির (এএসএম) সস্টুডেন্টস চ্যাপ্টারের উদ্যোগে বিশ্ব ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) দিবস উদযাপিত হয়েছে। আর এই দিবসকে ঘিরে টিশার্ট বিতরণ, কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানসহ করা হয় নানা আয়োজন।রবিবার (৪ মে) এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের শুরুতে ইবনে সিনা ভবনের সামনে থেকে […]

ইবিতে গুচ্ছ ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন

Share the post

Share the postসুবংকর রায়, ইবি প্রতিনিধি:কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কেন্দ্রে আসন্ন গুচ্ছভু্ক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ‘বি’ ইউনিটভুক্ত সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট উপস্থিতির হার ছিল ৯৬ শতাংশ।শুক্রবার (০২ মে) বেলা ১২:৩০ মিনিটে ভর্তি পরীক্ষা শেষে সামাজিক অনুষদের অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি […]