বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছি: ফেরদৌস

Share the post

কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-কমিটির অনুমোদন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ৪৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে নাম এসেছে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের। বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে কমিটির অনুমোদন দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কমিটির কার্য মেয়াদ ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত। ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-কমিটির অন্যতম সদস্য হিসেবে নাম ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবির নায়ক ফেরদৌসের কথা হয়। আলাপের পুরো অংশ তুলে ধরা এ সাক্ষাৎকারে:

সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-কমিটিতে স্থান পেলেন। যদি অনুভূতি জানতে চাই?

এ অনুভূতি অসাধারণ। অল্পকথায় বোঝানো যাবে না। দেশের প্রাচীনতম দল আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য হতে পেরেছি বলে গর্ববোধ করছি। ধন্যবাদ জানাচ্ছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে; আমাকে যোগ্য মনে করে তার সঙ্গে রাখার জন্য। একই সঙ্গে ধন্যবাদ জানাই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করার জন্য। যে উদ্দেশ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের যাত্রা আমি যেন সক্রিয়ভাবে সেটার সঙ্গে থাকতে পারি এবং মানুষের সেবা করতে পারি। একজন সংস্কৃতি কর্মী হিসেবে বিশ্বাস করি, জাতি গঠনের অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে সংস্কৃতি। যে জাতি সংস্কৃতিতে যতবেশি মেধাশীল, সেই জাতি তত বেশি উন্নত। যেহেতু আমরা দিনে দিনে উন্নত রাষ্ট্রের দিকে আগাচ্ছি, আমি চেষ্টা করবো আমার সেক্টরকে আরও সামনে এগিয়ে নেয়ার। সর্বোপরি ওবায়দুল কাদের স্যার, অসিম কুমার দাদা প্রত্যেককেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-কমিটি দেশীয় সংস্কৃতিতে কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে?

শুরু থেকে সরকার নানাভাবে সংস্কৃতি অঙ্গনকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এ অঙ্গনের জন্য প্রতিবার বিরাট বড় বাজেট বরাদ্দ থাকে। চলচ্চিত্রের প্রতিনিধি হিসেবে বলছি, সেখান থেকে যেসব ভালো সিনেমা তৈরি হওয়ার কথা সেগুলোতে আরও ভালো করে পৃষ্ঠপোষকতা করা যেতে পারে। যেমন- সরকারি অনুদানে যেসব সিনেমা অনুমোদন পায়, অনেকগুলো কমপ্লিট হয় না। সেক্ষেত্রে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে যাতে আরও ফলপ্রসূ ফলাফল পাওয়া যায় এটা অবশ্যই সংস্কৃতিক উপকমিটির এখতিয়ারের মধ্যে থাকবে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সঠিকভাবে সাংস্কৃতিক চর্চা, বিশেষ দিন বা উৎসবে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ছাড়াও বিভিন্ন কাজের সুযোগ রয়েছে। সবেমাত্র অনুমোদন পেলাম। যখন আমরা মিটিংয়ে বসবো এসব বিষয়গুলো নিয়ে অবশ্যই কাজ করবো।

বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায়, ইন্ডাস্ট্রির ভালোর জন্য মূলধারা কিছু সিনেমা অনুদানের অনুমোদনে বিবেচনায় থাকবে?

প্রতিবার যদি ১০টি সিনেমায় অনুদান দেয়া হয়, আমি চাইবো নিয়মিত যারা সিনেমা বানাচ্ছে কমপক্ষে ৫ টি ভালো সিনেমা অর্ধেক কাজ করেও জমা দিলে সেটার উপর ভিত্তি করে অনুদান দেয়া যায় কিনা! আমি দেখেছি, অনেকেই অনুদান নিয়ে ব্যক্তিস্বার্থে কাজে লাগায়। সরকার যে উদ্দেশ্যে অনুদান দিচ্ছেন সেটার সঠিক ফল আসছে না। অবশ্যই আমি এ ব্যাপার নিয়ে কথা বলবো। কারণ, সরকার চাইছে নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আমাদের চলচ্চিত্রকে সঠিক নির্দেশনা দিতে। তাই নিজেদের বোধ থাকা উচিত, সরকার বিশ্বাস করে এতোগুলো টাকা দিচ্ছেন সিনেমা বানানোর জন্য, নিজেরা কীভাবে সেই দায়িত্ব অবহেলা করি!

বিভিন্ন মাধ্যমে শোনা যায় রাজনীতি নিয়ে আপনার সুদূরপ্রসারী ভাবনা আছে। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন?

আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকতে চেয়েছি এবং সবসময় চাই। আমাকে সেই সুযোগ করে দেয়া হলো, নেত্রী যদি কখনও মনে করেন, ফেরদৌসকে অন্যদিকে দেয়া উচিত তাহলে উনি যা ভালো বুঝবেন করবেন। আমাকে উনি যেখানেই রাখেন সেখান থেকে কীভাবে ভালো কাজের চেষ্টা করবো। তবে হ্যাঁ এটা সত্যি যদি কোনো পদে থাকা যায় তাহলে আলাদা সাপোর্ট পাওয়া যায়। আবার না থাকলেও কিন্তু সমস্যা নেই। কারণ, এতদিন ধরে তো আমি কাজ করে যাচ্ছি। নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা থেকে অনেককিছু করেছি। সেটা কোনো কিছু প্রাপ্তির আশায় ছিল না। তবে আমাকে যদি যোগ্য মনে করা হয় অবশ্যই সেটার মূল্যায়ন করবো ইনশাল্লাহ।

রাজনীতিতে আসতে কেউ আপনাকে অনুপ্রাণিত করেছেন নাকি স্বেচ্ছায় এসেছেন?

অবশ্যই অনুপ্রাণিত করেছেন। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছি। তার জীবনী, অসমাপ্ত আত্মজীবনী বা তার সম্পর্কে যেসব জিনিস পড়েছি সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এসেছি। ছোটবেলা অনেক বেশিকিছু জানতাম না। বাবার মুখে প্রথম শুনেছিলাম শেখ সাহেবের কথা। বাড়ন্ত বয়সেও অনেককিছু অজানা ছিল। পরে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে জানা শুরু করলে তিনি আমার মধ্যে ধারণ করতে থাকলেন। ধীরে ধীরে মনে হলো তিনি প্রকৃত বাঙালি ও বাংলাদেশী। যিনি মানুষের কল্যাণের জন্য জীবনটাকে উৎসর্গ করে গেছেন। শুধু তিনি একা নয়, তার পরিবারের অনেক সদস্য দেশ ও মানুষের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। এটা বেশি অনুপ্রাণিত করে। তারই কন্যা সমস্ত ব্যথা কষ্ট বুকে রেখে দেশের মানুষের সেবা করে যাচ্ছে। আমার কাছে মনে হয়, এটা বিশাল ব্যাপার। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রকাশের জন্য রাজনীতির কাজগুলো করেছিলাম। আমি জানি, আমার অবস্থান থেকে মানুষ আমাকে খুব ভালোবাসেন। তাদের কল্যাণে কিছু করতে চাই। মানবসেবা করতে হলে সঠিক পথ থাকা অনেক জরুরী। পদ্মা সেতু হবে এটা কয়েক বছর আগে আমরা কল্পনা করতাম। সত্যি সত্যি পদ্মা সেতু হয়ে গেল। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমার যাওয়া আসা হয়। সারাদেশে কিন্তু সাংঘাতিক উন্নয়নের জোয়ার বইছে যেটা হয়েছে বর্তমান সরকারের আমলে। পরিশেষে বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতি আমার কৃতজ্ঞা। সবাইকে বিজয়ের মাস ও মুজিব বর্ষের শুভেচ্ছা। কদিন পরেই নতুন বছর। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি। প্রত্যেক বাংলাদেশীকে বলবো, যে যার অবস্থান থেকে আরেকটু বেশি দেশপ্রেম বাড়িয়ে বাংলাদেশকে ভালবাসতে। তবেই আমরা উন্নত রাষ্ট্রে যেতে পারবো।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

রাজশাহীর ধামরাই স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে সিফাত-আলমগীর

Share the post

Share the post সৈয়দ মাহিন ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :রাজশাহীতে অবস্থানরত সাভার-ধামরাই স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ২০২৫-২৬ সেশনের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি হিসেবে আরবী বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত সিফাত  এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের আলমগীর এইচ রানা নির্বাচিত হয়েছেন। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সংগঠনটির এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ […]

ওয়েব পোর্টাল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ইবির আইসিটি বিভাগে নবীনবরণ

Share the post

Share the postইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগ ও স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব আইসিটি (এসএআইসিটি)-এর উদ্যোগে নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় বিভাগের ওয়েব পোর্টালের উদ্বোধনও করা হয়। রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবনের ১০২ নং এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এসময় আইসিটি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে […]