নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

Share the post
সোহেল খান দূর্জয়, নেত্রকোনা: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে এবং সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ’ নামে একটি চক্র কয়েক শতাধিক লোকজনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের জুড়াইল গ্রামের হারুন মিয়া ও রঙ্গু মিয়াসহ অন্তত অর্ধশত ভুক্তভোগী স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এ অভিযোগ করেন।ভুক্তভোগীরা জানান, সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের নামে উপজেলা নওপাড়া ইউনিয়নে জুড়াইল গ্রামের ইউপি সদস্য সেলিম মিয়া, সাবেক ইউপি সদস্য সালেক মিয়া ও ওমর ফারুক ছোটনসহ একটি চক্র গত তিন চার বছর আগে গ্রামের সহজ সরল নারী-পুরুষকে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে এবং সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে তাদের সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয়পত্র ও সনদপত্রও প্রদান করা হয়। কিন্তু এসব সনদ যাচাই করতে গিয়ে তারা জানতে পারেন- এগুলো ভুয়া। এরপর তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের বার বার তাগাদা দিলে তারা তালবাহানা শুরু করে। ভুক্তভোগী রঙ্গু মিয়া বলেন, সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে তারা আমার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নেয়। তারা বলে যে, সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হলে সরকার প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভাতা দিবে। এছাড়া আরও অনেক সুযোগ সুবিধা দিবে।কিন্তু এখন কোনো সুবিধা পাচ্ছিই না। উল্টো আমাদের ৫ হাজার করে টাকাও তারা নিয়ে গেছে। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই এবং এ প্রতারণার বিচার চাই। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, যারা গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলোর সাথে প্রতারণা করে তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এ প্রতারণার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাই। তা না হলে তারা আরও বড় বড় অন্যায় করার সুযোগ পেয়ে যাবে।
একই দাবি জানান, স্থানীয় বাসিন্দা আজহারুল ইসলাম রুশ মিয়া, সাফায়েত হোসেন ও আল আমিন মিয়াসহ অনেকেই। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য সেলিম মিয়া ও সাবেক ইউপি সদস্য সালেক মিয়ার মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে ওমর ফারুক ছোটনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এক সময় সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সাথে জড়িত ছিলাম। পরে অসুস্থতার কারণে চলে আসি। এরপর আর এ বিষয়ে কোনো খবর রাখিনি। এছাড়া সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে আমার গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে আমি এবং সেলিম মেম্বার কোনো টাকা পয়সা নেইনি। যদি কেউ আমাদের নাম বলে থাকে তাহলে এটা ঠিক না। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. বজলুর রহমানের সাথে  কথা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি আমি জানি। একটা চক্র সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষের কাছ থেকে ৫ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ওই সময় আমরা প্রতিবাদও করেছি। তখন আমাদের সাথে যারা যোগাযোগ করেছেন আমরা তাদের টাকা দিতে নিষেধ করেছি। তবুও শত শত মানুষের কাছ থেকে তারা প্রতারণা করে টাকা নিয়ে গেছে এবং প্রত্যেককে একটি পরিচয়পত্র ও সনদপত্রও দিয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয় এর উদ্যোগে গাজায় চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল

Share the post

Share the postনিউজ রিপোর্ট:৮ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার – ময়মনসিংহ মহানগরের অধীনস্থ ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয় ছাত্রদল গাজায় চলমান ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যার প্রতিবাদে একটি অবস্থান কর্মসূচি এবং বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানায়, গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে।   মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রদল সদস্যরা সকাল ১১ টার দিকে মিছিলটি শুরু […]

ভালুকায় নিহত শ্রমিকদলনেতার পরিবারকে তারেক রহমানের ঈদ উপহার

Share the post

Share the postআল আমিন, ভালুকা (ময়মনসিংহ) :ময়মনসিংহের ভালুকায় শ্রমিকদলনেতা মরহুম রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে ময়মনসিংহ বিভাগীয় শ্রমিকদলের সভাপতি আবু সাইদ ও ভালুকা উপজেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ সুজন ওই উপহার সামগ্রী মরহুম রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর পরিবারের কাছে পৌছে […]