

সোহেল খান দূর্জয়,নেত্রকোনা : নাশকতা মামলার আসামি এমন একজন শিক্ষককে দ্বিতীয়বারের মতো নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া কেন্দুয়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এটা হচ্ছে বলে কলেজের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন। এর আগে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে মামলার তথ্য গোপন করে শফিকুল আলম খসরু নামে ওই শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বাগিয়ে নেন। অবশ্য মামলার বিষয়টি জানাজানির পর একই দিন বিকেলে ওই নিয়োগ আদেশটি বাতিলও করা হয়।
তবে সম্প্রতি নাশকতা মামলার আসামি শফিকুল আলম খসরুকে পুনরায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়েছেন বলে এলাকায় সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে নিয়ম মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। নিয়মানুযায়ী- কোন শিক্ষক ফৌজদারি মামালার আসামি হলে তিনি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর কেন্দুয়া সরকারি কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক শফিকুল আলম খসরুর বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা হয়। নাশকতার মামলা থাকায় নিয়ম অনুযায়ী কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক শফিকুল আলম খসরু ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন। ফলে দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাওয়ার কথা। কিন্তু মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ও মামলার তথ্য গোপন করে শফিকুল আলম গত ৪ ফেব্রুয়ারি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বাগিয়ে নেন। পরে জানাজানি হলে তা বাতিল করা হয়। তবে এবার বড় লবিং তদবিরে ফের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ পেয়েছেন বলে এলাকায় প্রচার করে যাচ্ছেন।
কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, শিক্ষক শফিকুল আলম খসরু আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে উঠাবসা করতেন। আওয়ামী পন্থী শিক্ষক হিসেবেই পরিচিত তিনি। সেই পরিচয় ব্যবহার করে বিগত সময়ে নানান সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। কলেজের আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ক্ষমতার দাপটে বিরোধীদের উপর প্রভাব বিস্তারসহ নানাভাবে অত্যাচারও করেছেন। গত ৫ আগস্টের পর তার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা হয়েছে। তারপরও তথ্য গোপন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ বাগিয়ে নেন। অবাক করা বিষয় হলো- মোটা অংকের টাকা ছিটিয়ে বর্তমান সময়েও তিনি আওয়ামী আমলের মতো প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন। আমরা চাই নিয়মানুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ হোক।
কেন্দুয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওমর কাইয়ুম শিক্ষক শফিকুল আলম খসরুর বিরুদ্ধে থাকা নাশকতার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক শফিকুল ইসলাম খসরু বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছেন কর্তপক্ষ। এরআগে নিয়োগ পেলেও একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। এর প্রেক্ষিতে পরে মাউসি কর্তৃপক্ষ তদন্ত শেষে আমাকে ফের আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ করেছেন। এদিকে মামলার বাদী এফিডেভিট জমা দিয়েছেন। এ বিষয়ে আর কোন সমস্যা নাই।