তদন্তের মধ্যেই পিটিআইয়ের হোস্টেলে হামলা, চারজন পুলিশ হেফাজতে
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের পটিয়ায় প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) চার প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের তদন্ত চলার মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নারী হোস্টেলে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বুধবার পিটিআইয়ের নৈশ প্রহরী ও বাবুর্চিসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে পিটিআইয়ের চার প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে ও তার প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের বাসায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান প্রশিক্ষক (আইটি) দেবব্রত বড়ুয়া দেবু। এ ঘটনায় প্রশিক্ষণার্থীদের টানা দুইদিনের আন্দোলনের মুখে গত রোববার অভিযুক্ত চার প্রশিক্ষককে প্রত্যাহার করা হয়। তারা হলেন- ফারুক হোসেন (শারীরিক শিক্ষা), জসিম উদ্দীন (সাধারণ), রবিউল ইসলাম (আইসিটি) এবং সবুজ কান্তি আচার্য্য (চারু ও কারুকলা)।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার দুইদিন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তদন্ত দলের প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবু হাসান ছিদ্দিক পটিয়া প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক, স্থানীয় ও প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জাবানবন্দি গ্রহণ করেন।
এরপর মঙ্গলবার রাতে ১২টার দিকে পিটিআইয়ে নারী হোস্টেলে হামলার ঘটনা ঘটে। রোকেয়া হলে থাকা প্রশিক্ষনার্থী জানায়, তিনজন লোক রাতে প্রীতিলতা হোস্টেলে আসে। পরে তারা রোকেয়া হলের জানালা ভাঙচুর করে ক্যাম্পাসের পূর্ব দিকে দেওয়াল টপকিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনায় বুধবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ করে প্রশিক্ষণার্থীরা। হোস্টেলে নারী প্রশিক্ষণার্থীদের নিরাপত্তা চেয়ে পটিয়া থানা পুলিশের কাছে লিখিত আবেদন জানান পিটিআইয়ের সুপারিনটেনডেন্ট (ভারপ্রাপ্ত) তপন কুমার দাশ।পরে এসআই খালেদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পটিয়া থানার এসআই খালেদ জানান, নৈশ প্রহরী ও বাবুর্চিসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তারা হলেন, বশির, আলম, রুস্তম ও মুহাম্মদ মামুন।
এ ব্যাপারে পটিয়া পিটিআই’র সুপারিন্টিডেন্ট (ভারপ্রাপ্ত) তপন কুমার দাশ বলেন, এক নারী প্রশিক্ষণার্থী আমাকে রাতের একটায় মোবাইলে কল দিয়ে জানান। আমি রাত গভীর হওয়ায় প্রশাসন কিংবা থানাকে অবগত করি নাই। তবে সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে জানাই এবং থানাকে লিখিতভাবে অবগত করি।
প্রসঙ্গত, পিটিআইতে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের দেড় বছরের প্রশিক্ষণ হয়। এরমধ্যে এক বছর পিটিআইতে থাকেন তারা। সেখানে আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। আর ছয় মাস বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পাঠদান করে থাকেন।
পটিয়ার পিটিআইতে বর্তমানে ২৮০ জন প্রশিক্ষণার্থী রয়েছে। প্রশিক্ষক রয়েছেন ৯ জন। আবাসিক ব্যবস্থায় মহিলাদের জন্য রয়েছে প্রীতিলতা ও রোকেয়া নামের দুইটি হোস্টেল আর পুরুষদের জন্য রয়েছে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ নামের একটি হোস্টেল।