ফুল হাতে শহীদ মিনারে মানুষের ঢল

Share the post

চট্টগ্রাম সংবাদ: ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই বাড়তে থাকে ভীড়। দলে দলে মানুষের পদযাত্রা। ফুল হাতে সেই জনতার ভীড় এসে শেষ হয়েছে নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সকাল ৮টার মধ্যেই ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথে রক্ত ঢেলে দিয়েছিল যে বীর সন্তানেরা, যাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে বাঙালি পেয়েছে বাংলায় কথা বলার অধিকার, তাদের শ্রদ্ধা জানাতে একুশের প্রথম প্রহরে ঢল নেমেছিল চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।গভীর রাতে মা-বাবার হাত ধরে ছোট্ট শিশু ফুল নিয়ে এসেছিল শহীদ মিনারে। এসেছিলেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। সবাই শহীদ মিনারের সামনে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। কারও হাতে ব্যানার, কারও হাতে ছোট্ট লাল-সবুজের পতাকা, কেউ নিয়েছেন পুষ্পস্তবক, কেউ বুকের কাছে ধরে রাখা একটি মাত্র গোলাপ। সবাই মিলেছেন এক মোহনায়।শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে মহান একুশের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে থেকেই লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে নগরীর লাভ লেইন থেকে নন্দনকানন হয়ে টিএন্ডটি অফিসের সামনে দিয়ে সিনেমা প্যালেস পর্যন্ত এলাকা।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রথম প্রহরে নগরের কে সি দে রোড এলাকায় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি প্রথম শ্রদ্ধা জানান সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।May be an image of 11 people and people standing

মেয়রের পরেই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ, সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সিপিবি, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

এরপর পর্যায়ক্রমে ট্যুরিস্ট পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, রেলওয়ে পুলিশ, চট্টগ্রাম জেলা আনসার কমান্ডার, ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম কারাগার, পরিবেশ অধিদফতর, পরিচালক স্বাস্থ্য, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

এদিকে করোনা মহামারীর কারণে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে শহীদ মিনারে সংগঠন থেকে সর্বোচ্চ ৫ জনকে এবং ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বোচ্চ দুইজনকে একসঙ্গে যাওয়ার নির্দেশনা ছিল সিএমপির। কিন্তু জনতার ঢলের কাছে সেই নিয়ম ভেস্তে যায়। এছাড়া শহীদ মিনার এলাকায় প্রবেশে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ব্যাগ ও সন্দেহজনক কিছু না নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি একুশে ফেব্রুয়ারি ঘিরে নগরে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।May be an image of 11 people and people standing

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ না হওয়া পর্যন্ত লালদিঘীর পাড় সোনালী ব্যাংক, জহুর হকার্স মার্কেট, আমতল, তিনপুল ও বৌদ্ধ মন্দির থেকে শহীদ মিনার সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সিনেমা প্যালেস সড়কের দিক থেকে পায়ে হেঁটে শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাইফেল ক্লাব সড়ক হয়ে বের হয়ে আসতে হচ্ছে ভাষাপ্রেমীদের।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated