শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলা: বহাল থাকল ১০ জনের ফাঁসির আদেশ

Share the post

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় দুই দশক আগে বোমা পুঁতে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায়ে ১০ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ভাষার মাসে বাংলা ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় বাংলায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।এর আগে, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছিল। গত ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈতবেঞ্চে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

সোমবার যুক্তিতর্কে রাষ্ট্রপক্ষ ২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামির সাজা বহাল চেয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ মামলার রায়সহ সব নথি ওই বছরের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর প্রধান বিচারপতির কাছে নথি উপস্থাপন করা হলে তিনি জরুরি ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন। মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত শেষে কার্যতালিকায় দেয়া হয়।মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ওয়াসিম আকতার, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।

এছাড়া মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন মামলা করেন।২০০১ সালের ৮ এপ্রিল ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। পরবর্তীকালে ২০০৯ সালের ২৯ জুন আরও নয়জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এরপর ২০১০ সালে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা-২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। সেখানে এই মামলার বিচার সম্পন্ন হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

নেত্রকোনায় বিকাশকর্মী রিজনের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন

Share the post

Share the postসোহেল খান দুর্জয়,নেত্রকোনা : নেত্রকোনায় বিকাশকর্মী রিজন তালুকদারের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা প্রেসক্লাবের সামনে নেত্রকোনা বিকাশসহ সব কটি মোবাইল ব্যাংকিং কর্মী ও সচেতন নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী এই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা বিকাশের ব্যবস্থাপক ধ্রুব সরকার, […]

বিজয়নগরে ২ পক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্ধ শতাধিক

Share the post

Share the postমাহমুদুল হাসান,স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম বিভাগঃফেসবুকে কথা কাটাকাটি জেরে দুই গোষ্ঠীর আধিপত্য নিয়ে বিজয়নগর উপজেলায় ঘন্টাব্যাপী মারামারিতে অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছে। ১৬ আগষ্ট শনিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত এই মারামারিতে উভয় পক্ষের অর্ধ শতাধিক আহত হয়। তাত্ক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন […]