অবুঝ দুই শিশুর জন্য বাঁচিয়ে রাখার আকুতিতে মন গলেনি পাষণ্ড বড় ভাইয়ের
চট্টগ্রাম সংবাদ: সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে নিজের ছোট ভাই নিজাম উদ্দিন মুন্নাকে ছুরিকাঘাতের পর জবাই করে খুন করেন বড় ভাই কামরুল ইসলাম।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল সাতটার দিকে পাহাড়তলী থানাধীন বার কোয়াটার এলাকার পশ্চিম নাছিরাবাদ নিজ বাড়ির কাছেই ফজু মিয়া সড়কের মা ভবনের সামনে নৃশংসভাবে খুন হন দুই সন্তানের বাবা নিজাম উদ্দিন মুন্না। সকাল ১০ টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, তখনও রক্তের দাগ লেগে আছে রাস্তায়।
নিহত মুন্নার বাবার নাম গিয়াস উদ্দিন। পাঁচ ভাই দুই বোনের মধ্যে নিহত মুন্না ছিলেন সেজ। মুন্নার স্ত্রী নাসরিম আকতার সুমী বাকপ্রতিবন্ধী। তাদের সংসারে আছে আড়াই বছর বয়সী কন্যা বিবি মরিয়ম জায়া এবং ৮ মাস বয়সী পুত্রসন্তান ইব্রাহিম।
ঘাতক কামরুলের মা জিন্নাত আরা বেগম একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বড় ছেলে কামরুলই তার ছোটভাই নিজামকে খুন করেছে। কিছুদিন আগে তাদের মধ্যে সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা করে দিয়েছি। এতে সে (কামরুল) সন্তুষ্ট ছিল না। কামরুল অনেক দিন ধরে নিজামকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসছিল। আজ সে অত্যন্ত নির্মমভাবে আমার বুকের ধনকে জবাই করে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। আমি তার উপযুক্ত বিচার চাই।’
প্রত্যক্ষদশী নিজামের ভাতিজা আক্তার উদ্দিন ইমন জানান, ভোর ৭টার দিকে ঘুম থেকে উঠে পাশের বাড়িতে কাউন্সিলর প্রাথী ছাবেরর পক্ষে ভোট কেন্দ্রে যেতে নিবাচনী এজেন্ট ডাকতে গিয়েছিলেন নিজাম। সকাল ফেরার পথে মা-ভবনের সামনে আগে থেকে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকে কামরুল। গতিরোধ করে নিজামকে এলোপাথারি কোপাতে থাকে কামরুল।
এসময় নিজাম তার বড় ভাইয়ের পায়ে ধরে বলেন, “ভাই আমাকে মারিও না। আমার ছোট ছোট দুটি সন্তান আছে। আমাকে ছেড়ে দাও।” কিন্তু এতেও মন গলেনি পাষণ্ড ভাই কামরুলের।
এই ঘটনায় শোকে পাথর হয়ে গেছেন নিজামের বাকপ্রতিবন্ধী স্ত্রী সুমি। ৮ মাস বয়সী সন্তান ইব্রাহিমকে কুলে নিয়ে আহাজারি করছেন তিনি৷ এসময় তিনি হাতের ইশারায় কামরুলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন। নিহত নিজামের ছোটবোন বিবি মুক্তা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “ছোট দুটি অবুঝ সন্তানের দায়িত্ব এখন কে নেবে। আমি ভাই হত্যার বিচার চাই।