বোয়ালখালীতে বিদ্যুতের মিটার নিতে বাধার সম্মুখিন হচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা বদন দে, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা
মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন খালেদ, বোয়ালখালী প্রতিনিধি: স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়া যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা বদন দে। শুধু একজন মুক্তিযোদ্ধা নন, একজন গুণী শিল্পীও। বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা সদারাম পাড়া লোকনাথ মন্দির সংলগ্ন ননী গোপাল দে’র ছেলে বদন দে। অন্য দশজনের মতো কাড়ি কাড়ি টাকা কামানোর চিন্তা কখনো ছিলোনা। দু’বেলা, দু’মুঠো খেয়েপড়ে বেঁচে থাকাটাই একমাত্র ইচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ঘরে বিদ্যুৎ ছিলোনা। জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম দফায় যে কয়েকটি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা ঘোষণা করেন তারমধ্যে বোয়ালখালী একটি। শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা ঘোষণায় একবুক আশা নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করেন বোয়ালখালী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসে। আবেদন করে জানতে পারেন বৈদ্যুতিক খুটি ঘরের কাছে না থাকায় নতুন খুটি নিতে হবে। শুরু হয় খুটি লাগানোর দৌড়ঝাপ। পটিয়া অফিস থেকে অনেক দৌড়াদৌড়ি করে বৈদ্যুতিক খুটি অনুমোদন করান। খুটি স্থাপন করা হলো। মিটারের জন্য বোয়ালখালী বিদ্যুৎ অফিসে টাকা-পয়সা জমা করা হলো। অনুমোদন হলো মিটারও। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী একব্যক্তির বাধায় মিটার সংযোগ দিতে পারেনি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। অথচ বদন দে’র আবেদনে স্থাপিত খুটি থেকে অনেকে সংযোগ নিয়ে ঘর আলোকিত করেছেন। এব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হলে তিনিও পরিষদের প্যাডে বদন দে’র বৈদ্যুতিক সংযেগ দেয়ার জন্য সুপারিশ করেন। নাম প্রকাশে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, এলাকার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বললেও বদন দে’র ঘরে বিদ্যুৎ না জ্বলা এবং মিটার সংযোগ দিতে বাধা দেয়া দুঃখজনক। শাকপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল মোনাফ বলেন, বদন দে’র ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগের দেয়ার জন্য বিদ্যুৎ অফিসে লিখিতভাবে সুপারিশ করেছি। তারপরও তার ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে না দেয়া দুঃখজনক। বদন দে জানান, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবনবাজি রেখে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। যুদ্ধের সময় শরীরে লাগা বুলেটের আঘাতের চিহৃ এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। কিন্তু স্বাধীনতার এতো বছর পরে এসেও ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য দিনের পর দিন, বছরের পর বছর বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছি। আশপাশের সকলের ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বললেও আমার ঘরে আলো জ্বলছে না। জন্মটাই না আমার আজন্ম পাপ! বোয়ালখালী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) রফিকুল আজাদ বলেন, বদন দে’র আবেদনের প্রেক্ষিতে বৈদ্যুতিক খুটি স্থাপন করা হয়েছে এবং তার ঘরে মিটার সংযোগ দিতে গেলে স্থানীয় একব্যক্তি তার ঘরের উপর দিয়ে তার যাচ্ছে বলে বাধা দেয়। তাই সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। বোয়ালখালী উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বদন দে’র ঘর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হোক এমনটি প্রত্যাশা স্থানীয় জনসাধারণের।