বান্দরবানের খুমি সম্প্রদায়: প্রথমবারের মত উচ্চাশিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন ২ শিক্ষার্থী
যোগাযোগ ব্যবস্থা আর আর্থ-সামাজিক অবস্থা। দুটোতেই সবচেয়ে পিছিয়ে বান্দরবানের খুমি সম্প্রদায়। যাদের ছেলেমেয়ের বেশি পড়লেখার স্বপ্নই কঠিন, সেখানে নানা বাধা পেরিয়ে তাদেরই দুই শিক্ষার্থী উচ্চাশিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন দুই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। যা এ সম্প্রদায় থেকে প্রথম। তাই উচ্ছ্বসিত এ জনগোষ্ঠীর মানুষ। ভবিষ্যতে নিজের পরিবার ও সম্প্রদায়ের পাশাপাশি দেশের জন্য কাজ করতে চান এ শিক্ষার্থীরা।
সুইতং খুমী। ছোট বেলায় হারান বাবাকে। মা ও দুই ভাইবোনকে নিয়ে অনেক কষ্টে চলছে পড়াশোনা। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন লামার কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজে। এরপর ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান পেয়ে সুযোগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভর্তি হন গ্রাফিক্স ডিজাইনে।
তিনি বলেন, খুমি সম্প্রদায়ের মাঝে আমি একজন বাংলাদেশের অক্সফোর্ড খ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেতে খুবই আনন্দিত। ভাইয়ের এমন সাফল্যে আনন্দিত তাঁর ছোট বোন তং সুই খুমী। সুইতং খুমীর মা লিংসাই খুমী বলেন, লামার কোয়ান্টাম কসমো স্কুল থেকে পড়ে আমার ছেলে ঢাকা ভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। যা খুমী গোষ্ঠীতে প্রথম। তাই আমি খুব খুশি।
তার মতো একি প্রতিষ্ঠানে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে সিলেট শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিদ্যায় উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পান অংহো খুমী। তিনি বলেন, ছোট্ট খুমি সম্প্রদায় থেকে আরেকটু যদি মনোযোগ দেই তাহলে আমাদের জন্য ভাল হত। আমাদের দেখে আমাদের ছোট ভাই-বোনের অনুপ্রেরণা পাবে।
শত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে তাদের এ সাফল্যে যেমন খুশি এ জনগোষ্ঠী ও তাদের শিক্ষকরা। তেমনি শংকা পড়লেখায় তাদের ব্যয়ভার নিয়েও।
কোয়ান্টাম কসমো কলেজের অধ্যক্ষ ছালেহ আহম্মদ বলেন, মেধা কোন বিশেষ জাতি বা ধর্মের বা বর্ণের উপর নির্ভর করে না।
সমাজ সেবক ও লেখক লেলুং খুমী বলেন, আমি জানি না তাঁরা কিভাবে তাঁদের পরাশোনার খরচ চালাবে, কারণ তাঁরা খুবই গরীব।
কৃষি নির্ভর এ গোষ্ঠীর মোট জনসংখ্যা মাত্র তিন হাজার। শিক্ষার হার ২৮ ভাগ।