

সোহেল খান দুর্জয়,নেত্রকোনা : নেত্রকোনা বারহাট্টা উপজেলা ৬ নং সিংধা ইউনিয়নের চরমল্লিপুর গ্রামের প্রায় দেড় কিলোমিটার গ্রামীণ কাঁচা রাস্তাটি বেহাল অবস্থা। দ্রুত রাস্তা পাকা করণের দাবি এলাকাবাসীর।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের চরমল্লিপুর গ্রামে রাস্তার একটু বৃষ্টি হলেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গ্রামের মানুষ,কৃষক ও শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ চলাচল করে থাকে। কিন্ত কোন প্রকার যানবাহন চলাচল করতে পারেনা। ওই গ্রামের শতাধিক পরিবারের মানুষ এলাকার বাহিরে যাওয়ার অন্যতম রাস্তা এটি। ফলে চাকরিজীবী থেকে শুরু করে স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা সবাই এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। জরুরি রোগী নিয়ে যেতে হলে কোন যানবাহন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে না পারায় রোগী নিয়ে যেতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। রাস্তার বেহাল দশার কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল কলেজে আসা-যাওয়া করতে কষ্টের শেষ থাকে না। দ্রুতই এই রাস্তাটি পাকার ব্যবস্থা করা হোক সেই দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় বাসিন্দা,অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক,মোঃ মঞ্জুরুল হক মঞ্জু বলেন: বারহাট্রা এল, জি, আর, ডি অফিসে র লোকদ্বারা রাস্তা মাফাইয়া পর পর ২ বার চেষ্টা করেও, রাস্তার কোড নাম্বার করাইতে পারি নাই। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই দুর্ভোগে ভুগছি। বারবার বলেও কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি, দ্রুত পাঁকা রাস্তা নির্মাণ ছাড়া উপায় নেই।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে রাস্তাটি সংস্কারকরণের জন্য দাবি জানিয়ে আসলেও কেউ কোনো কাজ করেননি। প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে থাকে। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। প্রায় সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে এ রাস্তাতে। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই অনেক ভোগাস্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয় গ্রামবাসীর। বিশেষ করে বৃষ্টিতে রাস্তাটি একদম চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তারপরও শত ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে গ্রামবাসীর
গ্রামবাসীরা আরো জানান, এ সড়কে প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত। একটু বৃষ্টিতেই সড়কটি কাদা-পানিতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল চলাচলও কঠিন হয়ে পড়ে। হেঁটে চলতেও ভোগান্তির শিকার হন বয়োবৃদ্ধ ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। জরুরি রোগী পরিবহন, উৎপাদিত শাক-সবজি পরিবহনে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। শুধু তাই নয়, অন্য গ্রাম বা শহর থেকে বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী দেখতে আসলে গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও রাস্তার বেহাল দশা দেখে বিয়ে ভেঙে দিয়ে চলে যায়। সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে হাত-মাজা ভাঙাসহ গাড়ির চাকা ভাঙার মতো ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা, এ.কিউ.এম মাসুদুল হক মাস্টার বলেন: এই এলাকায় প্রায় সবাই মিলে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার, প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। তাই ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
এদিকে, সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীরাও বিদ্যালয়ে যেতে অনীহা প্রকাশ করে বলে জানান গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীর অভিযোগ, স্বাধীনতার পর থেকে জনপ্রতিনিধিরা পাকা সড়কের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার রাস্তা মাপামাপি করলেও কোনো উন্নয়ন কাজ হয়নি।
এ ব্যপারে গ্রামবাসী বলেন, রাস্তার এই করুণ অবস্থা আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মেম্বার ও চেয়ারম্যান জানিয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তাই আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব খবিরুল আহসানের নিকট রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন।