

মীর কাশেম আজাদ,কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হাতিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন চিকিৎসকসহ বন বিভাগের ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আহতরা হলেন- কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ, ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন হাতেম সাজ্জাদ জুলকারনাইন ও গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তাদের মধ্যে হাতেম সাজ্জাদ জুলকারনাইন ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে, রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্যরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহতদের মধ্যে ডা: মোস্তাফিজুর রহমানের বুকের হাড় ভেঙে গেছে, এছাড়াও শরীরে গুরুতর বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। গুরুতর আহত ৩ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ জানান, পার্বত্য উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ি বন রেঞ্জ থেকে খবর আসে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হাতিটি বর্তমানে রামু উপজেলার দারিয়ারদীঘি সংরক্ষিত বনে অবস্থান করছে। সে খবরের প্রেক্ষিতে শুক্রবার একদল চিকিৎসকসহ বন বিভাগের ১৫ সদস্যের একটি দল নিয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ দারিয়ার দীঘি সংরক্ষিত গভীর বনে যান।
সময় কিছু বুঝার আগে হঠাৎ পেছন থেকে সবার উপর আক্রমণ করে হাতিটি। এতে ১৫ জন সবাই আহত হয়। হাতিটি আক্রমণ করে একটি বন্দুকও কেড়ে নিয়ে বনের ভেতর ফেলে দিয়েছিল। পরে অনেক খুঁজাখুঁজি করে বন্দুকটি উদ্ধার করতে সক্ষম হই।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আসলে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি আহত হাতিটি যাতে সুচিকিৎসা পায়। চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে বনকর্মীরা আহত হলেও এখন হাতিটির গতিবিধি আমরা লক্ষ্য রাখছি।
বন কর্মীরা জানান, মাইন বিস্ফোরণে হাতিটির সামনের ডান পা প্রায় অবশ। ওই পায়ের তলা ও নখ উড়ে গেছে। বাকি তিনটি পায়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হচ্ছে হাতিটিকে। পায়ের ক্ষতের যন্ত্রণা নিয়ে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছে হাতিটি। গত রোববার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে হাতিটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হয়
চিকিৎসকেরা বলছেন, রক্ত ও পানিশূন্যতায় হাতিটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। দীর্ঘমেয়াদে নিবিড় পরিচর্যা দরকার আহত হাতিটির।
বন বিভাগের নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক সরকার বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের মিয়ানমারের অংশে পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে হাতিটি আহত হয়। আহত অবস্থায় সেটি গত রোববার রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের জারুলিয়াছড়ি ও আশারতলির মাঝামাঝি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।আহতদের মধ্যে ডা: মোস্তাফিজুর রহমানের বুকের হাড় ভেঙে গেছে, এছাড়াও শরীরে গুরুতর বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। গুরুতর আহত ৩ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
শুক্রবার থেকে সেনাবাহিনী এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বিদেশ থেকে নিয়মিত সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।