

আব্দুল্লাহ আল মামুন, ববি প্রতিনিধি : বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ছাত্রদল কর্মী রবিন মিয়া শেরে বাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এস এম ওয়াহিদুর রহমানকে রড দিয়ে পেটানোর চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ২০০৮ নাম্বর কক্ষে এঘটনা ঘটে। জানা যায় ওয়াহিদুর রহমান ও ছাত্রদল কর্মী রবিন একই কক্ষে থাকেন ।
বুধবার রাত ১২টার দিকে রুমের মধ্য মোবাইল ফোন ও ব্লুটুথ স্পিকার বাজানোকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডায় জড়ান দু’জন। এর একপর্যায়ে ছাত্রদলকর্মী রবিন রড নিয়ে মারতে উদ্যত হন বৈষম্যবিরোধী নেতা ওয়াহিদুর রহমানকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়াহিদ ঘুমানোর জন্য রবিনকে রুমে মোবাইলে সাউন্ড দিয়ে ভিডিও না দেখার জন্য বলেন। রবিন মোবাইল ফোনের সাউন্ড বন্ধ না করায়, পাল্টা ব্লুটুথ স্পিকার বাজায় ওয়াহিদুর রহমান। এরপরেই ওয়াহিদুরকে রড নিয়ে মারতে উদ্যত হন ছাত্রদল কর্মী রবিন মিয়া। এর প্রতিবাদ করলে দুজনের মধ্য বাকবিতন্ডা হয়, এসময় একে অপরকে গালিগালাজ করতে দেখা যায় দু’জনকেই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রাত ১২টার পর রুমে কেউ ঘুমিয়ে গেছে কেউ পড়ছে তখন রবিন মোবাইলে সাউন্ড দিয়ে ভিডিও দেখছিলেন। কিছুক্ষণ পর ওয়াহিদ এসে মোবাইলের সাউন্ড বন্ধ করতে বলেন এতে সাড়া না দেয়ায় ওয়াহিদ ব্লুটুথ স্পিকার বাজায় এতে দুজনই উত্তেজিত হয়ে পড়ে। দুজন একে অপরকে মধ্য তীব্র বাকবিতন্ডা হয় এবং গালিগালাজ করেন একে অপরকে। রড নিয়ে পিটানোর চেষ্টার বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি। তবে তারা সবাই এই দুজনকে নিয়ে বিরক্ত বলে জানান।
রবীন মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। রবিন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের শিহাব-মোশারফ কোরামের সাথে রাজনীতি করেন বলে জানা যায়। ওয়াহিদুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলার সাবেক সদস্য সচিব।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রুমের একজন বলেন, তারা দুজনই দুটি রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী যারা আছি তারা কিছুটা ভয়ে থাকি তাদের। ওয়াহিদ রুমে উঠেছেন চারদিন এর মধ্য রবিন আর তার মধ্য ঝামেলা লেগে আছে। রবিন শুরুতে উঠতে দিতে চায়নি ওয়াহিদকে। ঘটনার দিন রবিন এবং ওয়াহিদ দুজনই উত্তেজিত হয়ে পড়ে কিন্তু রবিন ওয়াহিদ মারতে যায় রড দিয়ে। পরে রুমে আমরা রবিনকে শান্ত করি। ছাত্রদলের আরেক সদস্য শাহিনুর রহমান সিফাত রুমে এসে বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াহিদুর রহমান বলেন, বুধবার রাত ১২টার পর হলের রিডিংরুম থেকে রুমে ফিরি ঘুমানোর জন্য। রুমে গিয়ে দেখি ছাত্রদল কর্মী রবিন মেবাইলে লাউড দিয়ে ভিডিও দেখছেন আমি তাকে লাউড দিয়ে ভিডিও না দেখার জন্য বলি। আমার কথায় কোন কর্নপাত না করায় আমি ব্লুটুথ স্পিকারে গান বাজায়। গান ছাড়ার মুহূর্তের মধ্য রবিন লুঙি গুছিয়ে রড নিয়ে আমাকে মারতে উদ্যত হয়। ওয়াহিদ বলেন, আমার বৈধ সিট থাকা সত্ত্বেও রবিন আমাকে সিটে উঠতে বাঁধা দেয়। আমি এখন নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি। বিষয়টি মৌখিকভাবে হলের প্রভোস্টকে জানিয়েছি, আগামী রবিবার এর বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিব।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদল কর্মী রবিন মিয়া বলেন, আমি আমার ফোনে সর্বনিম্ন সাউন্ড দিয়ে একটা ক্লাসের ভিডিও দেখে নোট করছিলাম। ওয়াহিদ মোবাইলের সাউন্ড বন্ধ করার জন্য বললে, আমি তা খেয়াল না করায় ওয়াহিদ উচ্চশব্দে ব্লুটুথ স্পিকার বাজায় রুমের মধ্য। আমি এর প্রতিবাদ করায় ও আমাকে গালাগালি করে এতে আমি কিছুটা রাগান্বিত হই । আমাকে যে পরিমাণ গালিগালাজ করেছে ওয়াহিদ তাতে যে কেউ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যে কোন কিছু করে ফেলতো আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ওয়াহিদ আগে ছাত্রলীগ করত এটা সবাই জানে এর প্রমাণও আমার কাছে আছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে শেরে বাংলা হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক ড. আবদুল আলিম বছির বলেন, বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে জেনেছি এবং দুই শিক্ষার্থীর সাথেই আমার কথা হয়েছে। আগামী রোববার এসে বিষয়টি সমাধান করবেন বলে জানান তিনি।