অসচ্ছল শিক্ষার্থীর পাশে ইবি’র ছাত্রদল নেতা
ইবি প্রতিনিধি: নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ মেলে অনেকেরই, কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া হয়ে ওঠে না সবার। তেমনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছাত্রী পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় পড়েছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন ইবি শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ। টাকার অভাবে থমকে যাওয়া স্বপ্নকে নতুন করে এগিয়ে নেওয়ার পথ খুলে দিয়ে তিনি যেন অন্ধকার কূপে আলো জ্বালালেন।
জানা যায়, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন ঐ শিক্ষার্থী। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায় তার পড়াশোনা। বাবার বয়সজনিত কারণে উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়, অসুস্থ মা গৃহিণী হওয়ায় সংসারে কোনো আয়ের উৎস আর থাকে না। দুই বড় ভাই ও বোন নিজেদের সংসারে ব্যস্ত থাকায় পরিবারের ছোট মেয়ে হিসেবে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া হয়ে ওঠেনি তার পক্ষে।
প্রথমবার নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ভর্তি হলেও পারিবারিক সমস্যার কারণে নিয়মিত ক্লাসে যোগ দিতে পারেননি তিনি। এক পর্যায়ে বাবা সিদ্ধান্ত নেন, মেয়েকে আর পড়াশোনা করাবেন না। ফলে মাঝখানে থেমে যায় তার শিক্ষা কার্যক্রম। কিন্তু উদ্যমী ও নাছোড়বান্দা এই শিক্ষার্থী পুনরায় পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন এবং ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে আবারও ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে গত বছর ভর্তি হয়েও পড়াশোনা না করায় কিছু নিয়মতান্ত্রিক জটিলতা তৈরি হয়।
এমন সময়ে নিজ জেলা পাবনা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি সাকিলের মাধ্যমে তার যোগাযোগ হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজের সঙ্গে। বিষয়টি জানার পর আনোয়ার পারভেজ তার পুনঃভর্তির ব্যবস্থা করে দেন এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
এছাড়াও, এর আগেও বায়েজিদ বোস্তামি নামে আইসিটি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক ভর্তি ফি হিসেবে ৫০০০ টাকা নিজ অর্থায়নে প্রদান করেছিলেন আনোয়ার পারভেজ। পরবর্তীতে থাকার জায়গা না থাকায় তাকে নিজের বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন এবং আশ্বস্ত করেন, যতদিন তিনি ক্যাম্পাসে থাকবেন, ওই শিক্ষার্থীর থাকা-খাওয়ার কোনো অসুবিধা হবে না। এভাবেই ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীর দায়িত্বভার নিয়েছেন ছাত্রদল নেতা আনোয়ার পারভেজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ছাত্রী বলেন,
“টাকার অভাবে আমার পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। পরবর্তীতে আনোয়ার পারভেজ ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে আমার পুনঃভর্তি ফি প্রায় ৬০০০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছেন। শুধু ভর্তি করিয়েই থামেননি, আশ্বস্ত করেছেন ভবিষ্যতেও যেকোনো সমস্যায় পাশে থাকবেন।”
আনোয়ার পারভেজ বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিকভাবে অসচ্ছল একজন ছাত্রী তার স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারছিল না। আমার কাছে সাহায্য চেয়ে যোগাযোগ করলে আমি তার পুনঃভর্তি ফি পরিশোধ করি। এছাড়াও তাকে আরো আশ্বাস দেই যে, ভবিষ্যতে তার যেকোনো প্রয়োজনে আমি পাশে থাকবো। জন্মদিন উপলক্ষে তাকে সহায়তা করতে পেরে গর্বিত বোধ করছি। তবে জন্মদিন না হলেও আমি তার পাশে থাকতাম। কারণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে হতদরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে হয়। সে শিক্ষা থেকেই ছাত্ররাজনীতি করছি এবং ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।”