মিলন বৈদ্য শুভ, রাউজান চট্টগ্রাম: পাকা ভবনের দ্বিতীয় তলায় মশারি টাঙ্গানো একটি কক্ষে ঘুমিয়েছিল ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র মো. ফয়সাল। ওই ভবনের সাথে লাগানো রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সবাই ভবন থেকে বের হতে পারলেও দ্বিতীয় তলায় আটকা পড়েন স্কুলছাত্র ফয়সাল। তবে তাকে উদ্ধার তৎপরতার কোন কমতি ছিল না। কেউ ভবনের পাশে সিড়ি লাগিয়ে জানালা ভাঙার চেষ্টা, কেউ দেওয়াল বেয়ে ছাদে উঠে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। সর্বশেষ পাশের ঘরের দেওয়াল ভেঙে ফয়সালকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু না, ততক্ষণে অগ্নিকান্ডে সৃষ্ট ধোয়ায় শ্বাসরোধ হয়ে প্রাণ হারান ফয়সাল। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়াও নিহত ফয়সালকে উদ্ধার করতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন চাচা হাবিব উল্লাহ ও দাদী শাহানু বেগম । ঘটনাটি ঘটেছে রাউজান উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম ডাবুয়া গ্রামের গণি চৌধুরীর বাড়িতে। নিহত ফয়সাল ওই এলাকার প্রবাসী রহমত উল্লাহ কাদেরের ছেলে। সে রাউজান বিআরসি স্কুল থেকে উত্তীর্ণ হয়ে রাউজান ছালামত উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত। ঘটনাটি ঘটে ৮মার্চ দিবাগত রাত দেড়টায় সময়। ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে দেশে ছুটে আসেন প্রবাসী কাদের। বাড়িতে পৌছান পরেরদিন সকাল ১১টায়। তার আজাহারীতে ভারি হয়ে উঠে সেখানার পরিবেশ। শোকের ছায়া ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকাজুড়ে। রাউজান ফায়ার সার্ভিসের সূত্র মতে, রাত দেড়টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে রান্নাঘরে সংরক্ষিত নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পুড়ে যায়। আগুনের লেলিহান শিখা পাকা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে সেখানেও ব্যপক ক্ষতি হয়। রাউজান ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। এতে ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে অন্যরা হলেন, মো. মুছা, মো. ইউসূফ ও মো. ইদ্রিস। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাউজান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা শাসুল আলম।