চট্টগ্রামে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ
চট্টগ্রাম সংবাদ: আমার বাবা-মা নেই। আমি এতিম। মহিউদ্দিন ভাই আমাকে বিয়ে করিয়েছেন, তিনি আমার অভিভাবক। আজ তিনি থাকলে অনেক বেশি খুশি হতেন। তিনিও মনেপ্রাণে চাইতেন আমি এই পদে আসি।’
দীর্ঘ ২০ বছর পর বুধবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঘোষিত কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদ পান ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক ভিপি আজিজুর রহমান আজিজ। পদ পেয়েই তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় একুশে পত্রিকাকে উপরের কথাগুলো বলেন তিনি।
আজিজ বলেন, ২৯ বছর ধরে আমি রাজনীতি করছি। আমি রাজনীতি ছাড়া কিছুই বুঝতাম না। করোনাকালে আপনারা দেখেছেন, আমি নিজে করোনা আক্রান্ত হয়েছি। আমরা মা মারা গেছে। আমি চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল পর্যন্ত গিয়ে কাজ করেছি। আমি কারাগারে ১৫-২০ হাজার মানুষের জন্য কাজ করেছি। আমি জীবনে কারো কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়েছি কেউ বলতে পারবে না।
আপনারা জানেন, আমি দীর্ঘদিন ছাত্ররাজনীতি করার কারণে সবসময় মাঠে ছিলাম, জনগণের সাথে ছিলাম। আমি রাজনীতির যে কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে কর্মসূচি; সবগুলোতে অংশগ্রহণ করেছি। এখন যেহেতু ২১ বছর পর সম্মেলন হয়েছে, অনেকজন প্রার্থী ছিলো কিন্তু সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ হচ্ছে দুইটা। তারা সবকিছু যাচাই-বাছাই করে এই কমিটি ঘোষণা করেছে। আমি মনে অরি আমার ত্যাগের মূল্যায়ন হয়েছে। -বলেন নতুন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ।
স্বেচ্ছাসবকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আজিজ বলেন, আমার নেতা মাননীয় শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ভাইয়ের কাছেও কৃতজ্ঞ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে চির কৃতজ্ঞ।
‘আমি চাই, যারা প্রার্থী ছিলেন তাদের সবাইকে নিয়ে কাজ করবো। আমি আগে যেরকম আজিজ ছিলাম, এখনো সবার সেই আজিজ হয়ে থাকতে চাই। আমার মধ্যে কোনো অহংকার, অহমিকা নেই। আমি সবার সাথে মিলেমিশে কাজ করতে চাই।’
আমি মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হইনি, সাধারণ সম্পাদকও হইনি; তারপরেও আমি দলীয় কর্মকাণ্ডগুলো চালিয়ে গেছি। আমি জনপ্রতিনিধি হওয়ার কথা ছিলো তাও হইনি, তারপরেও আমি মাঠ ছাড়িনি। আপনারা দেখেছেন, যখন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হচ্ছিল তখন আমি প্রার্থী ছিলাম। মনোনয়ন পাইনি। হয়তো আল্লাহ ভালো মনে করে, আমার কপালে এটাই রেখেছেন। বলেন আজিজুর রহমান।
আজিজ বলেন, আমার রাজনীতির শুরু ১৯৯৬ সাল থেকে। ৯৬ সালে আমি নিউমার্কেট মোড়ে অসহযোগ আন্দোলন করেছি। এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে যখন আঘাত করে তখন আমি এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। আমার পায়ের মধ্যে এখনও আঘাতের চিহ্ন আছে। মহিউদ্দিন ভাইকে তখন থেকে আমি ভালোবাসতাম। তিনি আমাকে নিজের ছেলের মতো পছন্দ করতেন। আজকে মহিউদ্দিন ভাই বেঁচে থাকলে অনেক বেশি খুশি হতেন।
আজকের দিনে মহিউদ্দিন ভাইকে বেশি মনে পড়ছে। তিনি ইন্তেকালের পাঁচ মাস আগে দায়িত্ব নিয়ে আমাকে বিয়ে পর্যন্ত করিয়েছেন; যেহেতু আমার মা-বাবা নেই, আমি এতিম। উনার দুঃসময়ে সবাই চলে গেছে কিন্তু আমি যাইনি, উনার সাথে ছিলাম। উনি সবসময়ই চেয়েছেন, আমাকে একটা দায়িত্ব দেয়া হোক। তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন, মহানগর ছাত্রলীগে আমাকে সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক করার জন্য। পারেননি বিধায় বলেছেন, পরে অন্য সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বানাবে। আজ সেটাই এলো। যোগ করেন আজিজ।