রাঙ্গামাটিতে গুলিতে জনসংহতি সমিতির নেতা খুন, মরদেহ পায়নি পুলিশ
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় সুরেশ চন্দ্র চাকমা জীবেশ (৫৫) নামে জনসংহতি সমিতির (সন্তু লারমা) এক নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।শুক্রবার ভোররাতে উপজেলার দুর্গম বঙ্গলতলি ইউনিয়নের বি ব্লক এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডে ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।নিহত সুরেশ সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেছে স্থানীয় একাধিক সূত্র।
তবে এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কিছুই জানায়নি তার সংগঠন জনসংহতি সমিতি।স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, নিহত সুরেশ চন্দ্র চাকমা জীবেশ মূল জনসংহতি সমিতির অনেক পুরোনো কর্মী এবং সাবেক গেরিলা সংগঠন শান্তিবাহিনীর সদস্য। তিনি বিভিন্ন সময়ে সাংগঠনিক নানান দায়িত্ব পালন করেছেন।সর্বশেষ তিনি উপজেলা কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংগঠনটির বিচার কমিটির উপজেলা প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন।
সুরেশ নিজের বাড়িতে নয়, বাড়ির কাছেই এক প্রতিবেশীর বাড়িতে রাতযাপনকালেই গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান।প্রাণনাশের ভয়ে তিনি নিয়মিতই নিজ বাড়ির বাইরে রাত্রিযাপন করতেন বলেও জানিয়েছে সূত্রগুলো।
এদিকে সকালে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে কোনো মরদেহেরও হদিস পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ধারণা করা হচ্ছে,তারা পৌঁছানোর আগেই মরদেহ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘হত্যাকাণ্ড হয়েছে সেটি পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে নিশ্চিতই বলা যায়। তবে লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, আমরা চেষ্টা করছি লাশ উদ্ধারের। স্থানীয়রাও এই ব্যাপারে সহযোগিতা করছে না।’তবে এই বিষয়ে মুখ খুলছে না জনসংহতি সমিতিও। সংগঠনটির দায়িত্বশীল কোনো নেতাই ফোন ধরছেন না।
অন্যান্য ঘটনায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক বিবৃতি পাঠানো হলেও এই হত্যাকাণ্ডের প্রায় ছয় ঘণ্টা পরও কোনো বিবৃতি পাঠানো হয়নি।সংগঠনটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক জুপিটার চাকমা বলেছেন, ‘তাদের নিজেদের মধ্যকার বিবাদে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে জেনেছি।’
তিনি বলেন, ‘ওই এলাকাটি সম্পূর্ণই জনসংহতির ঘনিষ্ঠ সংগঠন ইউপিডিএফের নিয়ন্ত্রণাধীন। সেখানে আমাদের পক্ষে প্রবেশ করাও কঠিন ও কষ্টসাধ্য। তারা নিজেরাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপাতে চাইছে।’