আগামী মাসে উদ্বোধন : এসপি আবিদার হাতে গড়া লালমনিরহাটে পুলিশের জাদুঘর
আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাট: দেশের উত্তরে সীমান্তবর্তী ছোট একটি জেলা লালমনিরহাট। ৫টি থানা নিয়ে এ জেলাটি গঠিত। ৬৪ জেলার ন্যায় এজেলার আইন শৃঙ্খলা খুবেই ভাল। বর্তমান এ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আবিদা সুলতানা। তিনি ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারী এসপি হিসেবে লালমনিরহাটে যোগদান করেন। এখানে যোগদানের পর একটি পুলিশের জাদুঘর কিভাবে করা যায় তার শক্ত ভাবনা চিন্তা শুরু করেন আবিদা সুলতানা।
এমতাবস্থায় তিনি জানতে পারেন হাতীবান্ধা থানার একটি প্রাচীন পাকা ভবনের কথা।ঐতিহ্য হিসেবে এটি রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের জাদুঘর নিয়ে কাজ শুরু করেন আবিদা সুলতানা। বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর লালমনিরহাটের কাজ সম্পন্ন।
আগামী অক্টোবর মাসে এর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। তবে এসপি আবিদা সুলতানার কাছ থেকে জানা গেল এ জাদুঘরের বৃত্তান্ত। সেই সাথে জানা গেল তারও জীবন বৃত্তান্ত।আবিদা সুলতানার জন্ম ১৯৭৩ সালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ঠেঙ্গারবাদ গ্রামে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা গ্রামেই। ভারতেশ্বরী হোমস কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ২২তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। পেশাগত জীবনে রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদকসহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।
এছাড়াও ঢাকার বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন তিনি। ২০১২ থেকে এর কাজের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পরিচালকের দায়িত্ব নেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে হাতীবান্ধা থানার পরিত্যক্ত পাকা ভবনে বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর, লালমনিরহাট স্থাপনের কাজ হাতে নেন লালমনিরহাটের এই পুলিশ সুপার।
বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর লালমনিরহাটে মোট সাতটি গ্যালারি থাকছে। প্রতিটি গ্যালারিতে রাখা নিদর্শনগুলো দর্শক ও গবেষকদের সামনে তুলে ধরতে কাচের আবরণ ও আলোর ব্যবস্থা থাকবে।
আবিদা সুলতানা বলেন, এই জাদুঘরে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ বাহিনী নানা স্মারক ও তথ্য সবার জন্য উপস্থাপন করা হবে। প্রাচীন এই ভবনের ঐতিহ্যও রক্ষা পাবে জাদুঘরের মাধ্যমে।
গ্যালারিগুলোতে সুলতানি ও মোগল আমল, ব্রিটিশ আমল, ভারতীয় উপমহাদেশে পুলিশের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ তুল ধরা হচ্ছে। গ্যালারি দুইয়ে এ থাকছে ব্রিটিশ আমল, আধুনিক পুলিশের যাত্রা। তিন নম্বর গ্যালারিতে রয়েছে স্বাধীনতাযুদ্ধ, ভারতীয় উপমহাদেশ ও বাংলাদেশ স্বাধীনতাযুদ্ধে পুলিশ।
গ্যালারি চারে রয়েছে ডার্করুম, গ্যালারি। পাঁচে রয়েছে মুক্তাঞ্চলে মুক্তি পুলিশ। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে ৬ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে। সে সময় গঠন করা হয়েছিল মুক্তাঞ্চলের মুক্তি পুলিশ। তাদের সে সময়ের কর্মকাণ্ড তুলে ধরাসহ কিছু নিদর্শন থাকছে এই গ্যালারিতে।
গ্যালারি ছয়ে আছে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। গ্যালারি সাতে বাংলাদেশ পুলিশ গ্যালারি, আধুনিক সময়কাল।