বন্ধের পথে কাপ্তাই কুষ্ঠ চিকিৎসা কেন্দ্র

Share the post

কাপ্তাই প্রতিনিধি : প্রতিবন্ধী কুষ্ঠ রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের উদ্দেশে কাপ্তাইয়ে ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ৬০ শয্যার বিশেষ শতবর্ষী হাসপাতাল ‘চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান কুষ্ঠ চিকিৎসাকেন্দ্র’। একমাত্র রেফারেল বিশেষ এ হাসাপালটি এখন অর্থনৈতিক সংকটে বন্ধের পথে।হাসপাতালটি স্থাপনের পর থেকেই তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান ছাড়াও চট্টগ্রাম শহর, পটিয়া, ফেনী মালুমঘাটে ক্লিনিক স্থাপনের মাধ্যমে কুষ্ঠ রোগীদের নিরলসভাবে সেবা দেওয়ার পাশাপাশি কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণে সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগকে সহায়তা করে ব্যাপক সুনাম কুঁড়িয়েছে। কিন্তু দক্ষ জনবল, উপকরণ ও দাতা সংস্থার অর্থিক সহযোগিতার অভাবে বন্ধের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে চিকিৎসা কেন্দ্রটি।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধ ভাঙা উচ্ছাসে পরিবার পরিজন নিয়ে সকলে দিন কাটছে আনন্দ ভাগাভাগী করে। কিন্তু ভালো নেই আশি উর্ধ্ব প্রমিচিং মারমা। বয়সের ভারে চেহারার পাশাপাশি ভাজ পড়ছে মনেও। কুষ্ট রোগ ছোঁয়াছে না হলেও সমাজের কুসংস্কারের প্রভাবে বাড়ি ফিরা হয়না তার। ভয়ানক কুসংস্কারে সমাজের মানুষ আজও গ্রহণ করেনি তাকে। শুধু প্রমিচিং মারমাই নয় কাপ্তাইয়ের শতবর্ষী খ্রীস্টিয়ান কুষ্ঠ চিকিৎসা কেন্দ্রে সেবা নেওয়া প্রায় ৩০জন রোগীর গল্পও একই সূত্রে গাঁথা।কুষ্ঠ রোগী মরিয়ম আক্তার বলেন, ‘আমরা কুষ্ঠ রোগী, আমরা কোন কাজকর্ম করতে পারি না। তাই আমরা সরকারের কাছে আমাদের কুষ্ঠ রোগীদের যেনো প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হয়।’চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালের চিকিৎসক সেলুমং মারমা বলেন, ‘এটি মাইক্র ভেকটোরিয়াম লেপস্রি দ্বারা হয়ে থাকে। এটি একজনের কাছ থেকে অন্যজনের কাছে ছড়ায় না।’চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান কুষ্ঠ হাসপাতালের পরিচালক প্রবির খিয়াং বলেন, এ হাসপাতালে অনেক কুষ্ঠ রোগী আছেন যাদের আরও ভালো উন্নতমানের চিকিৎসা দরকার। পাশাপাশি তাদের অপরেশনও দরকার। তাদের হাত এবং চোখে অনেক ধরণের সমস্যা হয়। এই অপারেশনগুলো আমরা এই মুহুর্তে করতে পারছি না আর্থিক সমস্যার জন্য। যদি কোন স্বহৃদয়বান ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসেন তবে চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের অপারেশনও করতে পারবো।১৯২৫ সাল হতে ইংল্যান্ড ভিত্তিক দ্যা লেপ্রসী মিশনের অর্থায়নে পরিচালিত হতো প্রতিষ্ঠানটি। কিন্ত ১৯৯৪ সালের পর হতে অর্থায়ন কমিয়ে দেওয়ায় নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয় প্রতিষ্ঠানটির। পরে ২০১০ সালের পর থেকে তাদের অর্থায়ন একেবারে বন্ধ করে দেয়।এরপর হতে কোন রকম সরকারি বা বেসরকারি সাহায্য সহায়তা ছাড়া মন্তর গতিতে খুঁড়িয়ে চলছে এ পুরাতন শর্তবর্ষী হাসপাতালটি। তাই বৃহত্তর চট্টগ্রামের আস্থারস্থল শতবর্ষী হাসপাতালটিকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তশালী, বিদেশি ও আর্ন্তজাতিক সাহায্যকারী ও এনজিওদের এগিয়ে আসার দাবি স্থানীয়দের।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

‎নবীগঞ্জে গলায় ফাঁস দিয়ে এক যুবকের আত্মহত্যা

Share the post

Share the post স্বপন রবি দাশ,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পশ্চিম জাহিদপুর গ্রামের তানভীর আহমেদ (৩০) নামে এক যুবক নিজ রুমে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি মৃত সিরাজ মিয়ার পুত্র। ‎স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতের দিকে তানভীর নিজের রুমে ঘুমাতে যান। শনিবার সকাল ৯টার দিকে রুমের দরজা না খোলায় পরিবারের সদস্যরা […]

খালেদা জিয়ার ৮১ তম জন্মবার্ষিকীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দোয়া অনুষ্ঠিত

Share the post

Share the postইয়াসিন আরাফাত ,চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা ও পৌর শাখা যুবদলের আয়োজনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্ম বার্ষিকী পালন করা হয়েছে চাঁপাইনবাবঞ্জে। এ উপলক্ষে শনিবার বিকালে জেলা শহরের ফুড অফিস মোড়ে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর যুবদলের […]