সৈয়দপুর রেলওয়ে জেলা থানার ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ উদযাপন

Share the post

রাজু আহম্মেদ (নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি): আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুগান্তকারী ভাষণের স্মারক হিসেবে দিনটি অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল জনসমাবেশে দেওয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এই ধারাবাহিকতায় সৈয়দপুর রেলওয়ে জেলা থানা ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ পালন করে আলন্দ উদযাপন করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,সিদ্দিকী তান্জিলুর রহমান, পুলিশ সুপার সৈয়দপুর রেলওয়ে জেলা। আরো উপস্থিত ছিলেন, শওকত আলী, ষ্টেশন মাষ্টার, সৈয়দপুর।

আরো উপস্থিত ছিলেন, আব্দুর রহমান বিশ্বাস, অফিসার ইনচার্জ সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা।আরো উপস্থিত ছিলেন শাহ আলম সহ আরজিনা খাতুন।প্রত্যেকে ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের বিশেষ কিছু কথা তুলে ধরেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার আহ্বানের অধীর অপেক্ষায় ছিল বাঙালি জাতি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিক-নির্দেশনা। স্বাধীনতার যে ডাক বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন, তা বিদ্যুৎ-গতিতে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। সেদিন বিকাল ৩টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত হন। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ময়দান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। স্লোগান ছিল ময়দান জুড়ে, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’। উপস্থিত জনতাকে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রায় ১৯ মিনিটের ভাষণে তিনি ইতিহাসের পুরো ক্যানভাসই তুলে ধরেন। তিনি বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।’

প্রকৃতপক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ ও স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদান রেখেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেদিন মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণে দীর্ঘ ২২ বছরের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেছিলেন। এই ভাষণের মাধ্যমে তিনি নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালিকে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রস্তুত করেছিলেন। ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ‘মেমোরি অব দা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ অন্তর্ভুক্ত করা হয় ভাষণটি। লেখক ও ইতিহাসবিদ এফ ফিল্ডের বিশ্বসেরা ভাষণ নিয়ে লেখা ‘উই সেল ফাইট অন দ্য বিস: দ্য স্পিচ দ্যাট ইন্সপায়ার্ড হিস্ট্রি’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ স্থান পেয়েছে। অসংখ্য ভাষায় অনূদিত হয়েছে এই ভাষণ। বিশ্বের যে কয়েকটি রাজনৈতিক ভাষণ উল্লেখযোগ্য তার মধ্যে এটি অন্যতম। রাষ্ট্রীয়ভাবে আজকের দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হচ্ছেে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

ধোবাউড়ায় ১৫ আগস্টে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা সন্দেহে আটক-১

Share the post

Share the postময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় ১৫ আগস্ট কর্মসূচি পালন করেছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।উপজেলার বাকপাড়া এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচি পালনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। আজ সোহেল মিয়া নামে এক ব্যাক্তিকে নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা সন্দেহে আটক করে থানায় আনা হয়। এই ঘটনার পর আটককৃত ব্যাক্তি […]

বিজয়নগরে মৎস্য সপ্তাহ উদ্বোধন, র‍্যালি,পোনামাছ অবমুক্ত ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

Share the post

Share the postমাহমুদুল হাসান,স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম বিভাগঃ ‘অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালিত হয়েছে। ১৮ আগস্ট সোমবার সকাল ১১টায় উপজেলা উপজেলা পরিষদ থেকে এ উপলক্ষে একটি র‍্যালি বের হয়ে উপজেলা চত্বর প্রদক্ষিণ শেষে আবারো একই স্থানে গিয়ে শেষ। পরে উপজেলা চত্বরের […]