

সোহেল খান দূর্জয়,নেত্রকোনা প্রতিনিধি : নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগে কাউন্সিলে নির্বাচন, না কেন্দ্রে কমিটি আসছে- এ নিয়ে জোর আলোচনা উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে। তবে গত ১৯ বছর আগে যে কাউন্সিল হয়েছে বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের, তাতে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও এই ধারাবাহিকতা রক্ষা হোক চান অনেক নেতা।
তবে কেউ কেউ বলছেন কেন্দ্রের কমিটি হলে বহাল থাকবেন বর্তমান নেতারা। অনেকের ধারণা, ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে শীর্ষ দুই পদসহ অধিকাংশ পদে। আসতে পারে নতুনদের দিয়ে কমিটি নতুন নেতৃত্ব।
দলের সিংহভাগ নেতাকর্মীর ধারণা, দীর্ঘদিন ধরে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুল ওয়াহেদ এবারও স্বপদে থাকছেন। তৃণমূল থেকে উঠে আসা আজিজুর রহমান ও কাজী আব্দুল ওয়াহেদের অনেকটা একক নেতৃত্বে কোনো ধরনের গ্রুপিং-দ্বন্দ্ব ছাড়া সাংগঠনিক কাজ চলছে বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের।
তবে প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতো কিছু দলীয় কোন্দল ও একাধিক গ্রুপ রয়েছে। তবে সম্মেলনের আগে তা মিটিয়ে আনতে কাজ করছেন অনেকেই।এই উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটিকে ঘিরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সব স্তরের নেতাকর্মীর মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
এর বিপরীত চিত্র পদধারী ও পদপ্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে। তারা ভুগছেন শঙ্কা আর আশা-নিরাশার দোলাচলে। কে হচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কান্ডারি। নাকি স্বপদেই বহাল থাকছেন বর্তমান কমিটির শীর্ষ দুই পদধারী।
শেষ পর্যন্ত এই কমিটিতে নতুন নেতা বাছাইয়ে সমঝোতায়, ভোটের মাধ্যমে, নাকি কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় নেতা নির্বাচিত হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে এখনো।
এদিকে কমিটিকে ঘিরে কাউন্সিলে অংশগ্রহণকারী নেতাদের ছবিসংবলিত ব্যানার-পোস্টার, বিলবোর্ড টাঙ্গানো হয়েছে উপজেলা শহরের প্রতিটি অলি-গলিতে। শোভা পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে দলীয় নেতাকর্মীদের ছবি। চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে প্রতিটি এলাকার দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বতর্মান কমিটির নেতারা জানান, নতুন কমিটিকে আরো চাঙ্গা করতে তাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে শীর্ষ দুই পদে কাউন্সিল ভোটে নাকি কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় হবে এ বিষয়ে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা নেই কারও।
উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে কারা আসছেন তা নিয়ে আলোচনা চলছে উপজেলা জুড়ে।
বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সামনে রেখে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বিভিন্ন পদে মোট ১৯ জন প্রার্থী রয়েছে।
সভাপতি পদে ৩ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ জন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে সর্বাধিক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ও অনেকেই লড়বেন বলে জানা গেছে।
সভাপতি পদে এখন পযর্ন্ত যাদের নাম আলোচনা ও সমালোচনায় তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ আজিজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সাবেক বারহাট্টা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মুহাম্মদ মাইনুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সাবেক বারহাট্টা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকনের নাম শুনা যাচ্ছে,
সাধারণ সম্পাদক পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি দীপক কুমার সাহা সেন্টু, উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য আসমত আলী মোল্লার নাম আসছে অনেক নেতাকর্মীর মুখে।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে চান উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী।
তবে এখনো জানা যায়নি সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আসছে কারা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী দীপক কুমার সাহা সেন্টু বলেন, আমি বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যোগ্য ব্যক্তির হাতেই তুলে দিবেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব।
তিনি বলেন,বিগত ১৯ বছর ধরে একেই কমিটি দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যক্রম, এর আগে যে সব কমিটি হয়েছে তাতে কাউন্সিলের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী খায়রুল কবীর খোকন বলেন,আমরা অতীতের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কাউন্সিলরের ভোটের মাধ্যমে সভাপতি পদে নির্বাচন করতে প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে কাউন্সিল নাকি কেন্দ্র থেকে কমিটি দেয়া হবে, এ ব্যাপারে নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
সভাপতি পদপ্রার্থী ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাইনুল হক বলেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করে আসছেন তাদের মূল্যায়ন করা হবে বলে আমার বিশ্বাস। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই দায়িত্ব দেবেন। যেখান থেকেই নেতৃত্ব আসুক তা মেনে নেব আমরা।