১৯ আগস্ট পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে সমুদ্র শহর কক্সবাজার
দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে সমুদ্র শহর কক্সবাজার। ফলে সাগর আর পাহাড়ের দেশ কক্সবাজারে আসতে আর কোন বাধা নেই। প্রথমদিনেই পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠেছে প্রাণের কক্সবাজার। তবে আগত অতিথি ও পর্যটক সংশ্লিষ্ট সকলের মানতে হবে বেশকিছু শর্ত। আর এসব বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে, দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস সমুদ্র ছিল জনমানবহীন কোলাহলমুক্ত। যে সমুদ্রকে ঘিরে এত আয়োজন করোনা নামক অনুজীবের বিরুদ্ধে চলমান বিশ্বব্যাপী সংগ্রামে সাড়ে ৪ মাস ধরে স্তদ্ধ ছিল সেই সমুদ্র সৈকত। ১ এপ্রিল থেকে কক্সবাজার জেলার পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ ছিল। কিন্তু নিষেধজ্ঞা উঠে যাওয়ায় প্রাণের উচ্ছ্বাস জেগেছে সমুদ্র শহর।
সূত্রটি আরও জানায়, ৫০ শতাংশ আসন ব্যবহার শর্তে খোলা হয়েছে সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল মোটেল ও রিসোর্টগুলো। ইতিমধ্যে বুকিং হয়েছে পঞ্চাশ শতাংশ কক্ষের বিপরীতে ২০ শতাংশে পর্যটক উঠেছে। আর যাত্রী সামাল দিতে বাড়ানো হচ্ছে দূরপাল্লার বাস ও ফ্লাইট। প্রথমদিনেই হাজার দশেক পর্যটক এসেছে।
এ বিষয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ইরশাদ হাসান বলেন, পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ায় বিমানের উপর চাপ বেড়েছে। তাই বৃহস্পতিবার থেকে ৩টি করে ফ্লাইট আসা যাওয়া করবে। প্রতিটি ফ্লাইটে থাকছে ৭২টি আসন। এখানেও স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পালন করা হবে। যদি আগামীতে পর্যটক বাড়ে তবে এই রুটে বোয়িং বিমানের ফ্লাইট চালু হবে।
দূরপাল্লার পরিবহন গ্রিন লাইনের কক্সবাজার ম্যানেজার সুলতান আহমেদ বলেন, এতদিন ঢাকা থেকে আমাদের দুই-তিনটি গাড়ি আসতো । কিন্তু বুধবার রাতে ঢাকা থেকে আমাদের ১০টি গাড়ি এসেছে। ফলে বোঝা যাচ্ছে কক্সবাজারে পর্যটক আসতে শুরু করেছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার বলেন, আমরা আশা করছি ধীরে ধীরে করোনাকালের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব। আবারো পর্যটকের পদভারে এই শহর মুখরিত হবে। প্রায়ই ২০ শতাংশ হোটেল কক্ষ ভাড়া হয়েছে। আশা করছি এটি সময়ের সাথে আরো বাড়বে।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ কলিম বলেন, প্রতিটি হোটেলে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জ্বর মাপার যন্ত্র রাখা হয়েছে। এছাড়া মাস্ক ছাড়া কোন অতিথিকে রুম ভাড়া দেয়া হবে না। তাছাড়া যারা করোনার টিকা নিয়ে আসবে তাদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রেখেছে হোটেল মালিকরা।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত ও আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের বেশ কয়েকটি টহল টিম কাজ করছে। এছাড়াও সৈকতে প্রবেশের প্রতিটি পয়েন্টে থাকবে আরও কয়েকটি টিম। তারা সবসময় মাইকিং করবে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে এবং মাস্ক ব্যবহার করতে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান বলেন, সমুদ্রের ৬টি পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে আদালত কাজ করবে।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ বলেন, কোন প্রতিষ্ঠান যদি শর্ত না মানে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হয় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।