

জলিলুর রহমান জনি,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় দশম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আবু কাছির হাসান হীরাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন সিরাজগঞ্জ চিপ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা উপজেলায় দশম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে আবু কাছির হাসান হীরা (৩০) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
দন্ডপ্রাপ্ত আবু কাছির হাসান হীরা সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার মোজাফ্ফরপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার ভূইয়ার ছেলে।সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সালমা খাতুন বুধবার এই রায় প্রদান করেন।
সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি মাসুদুর রহমান (মাসুদ) এতথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মামলার অপর আসামী নুরনবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। তিনি রায়গঞ্জ উপজেলার চক সাগর গ্রামের ঈমান আলীর ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত আবু কাছির হাসান হীরা ভুক্তভোগী কিশোরীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এই ঘটনা জানাজানি হলে ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
বিচারক সালমা খাতুন তার রায়ে বলেন, ‘এ ধরনের অপরাধ সমাজের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং এর মাধ্যমে নির্যাতিতার জীবনে চরম ক্ষতি সাধিত হয়। তাই অপরাধীর শাস্তি অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক হওয়া প্রয়োজন।’
এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ভুক্তভোগীর পরিবার বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি, এটি ভীষণ স্বস্তিদায়ক।’
এই ধরনের ঘটনা সমাজে নারীর নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে ধরছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আরও কঠোর আইনের প্রয়োগ এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। এই রায় নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন রায় নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে শুধুমাত্র আইনি পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। শিক্ষাব্যবস্থায় নারী ও শিশু অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
সিরাজগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দারা এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, ‘আমাদের সমাজে এরকম ঘটনা আর যেন না ঘটে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
এই রায়ের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা এবং সমাজে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গুরুত্ব আবারও প্রমাণিত হলো।
স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশু প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত ভরণ পোষনের দায়ভার দন্ডপ্রাপ্ত আসামী ও আসামীর বিদ্যমান সম্পদ থেকে বহন করতে হবে বলে রায়ের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।