

১৩২ আরোহী নিয়ে দুর্ঘটনার শিকার চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে শব্দের কাছাকাছি গতিতে চলছিল।পরে তিন মিনিটের কম সময়ের মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার ফুট নিচে নেমে গিয়ে দেশটির গুয়াংশি অঞ্চলের পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি।
ফ্লাইট-ট্র্যাক ডেটা পর্যালোচনা করে বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ নিউজ।১৩২ আরোহীর মধ্যে কারও বেঁচে থাকার কোনো প্রমাণ পাননি বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।
চীনের বেসরকারি বিমান চলাচল সংস্থা জানায়, এমইউ-৫৭৩৫ ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় কুনমিং থেকে গুয়ানঝোউর উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর পর ফ্লাইট ট্র্যাকার ফ্লাইটরাডার-২৪ বিমানটির অবস্থান ‘অজ্ঞাত’ দেখায়। পরে গুয়ানসি অঞ্চলের উঝোউ শহরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বোয়িং-৭৩৭ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
ফ্লাইট ট্রাকার ফ্লাইটরাডার-২৪ এর তথ্যানুযায়ী, বিমানটি মাত্র সোয়া দুই মিনিটে ২৯ হাজার একশ ফুট থেকে ৯ হাজার ৭৫ ফুট নিচে নেমে আসে। এর পরের ২০ সেকেন্ডে আরও নিচে নামে বিমানটি। তিন হাজার ২২৫ ফুটের পর বিমানটি থেকে তথ্য আসা বন্ধ হয়ে যায়।
সাধারণত ওই উচ্চতা থেকে নামতে একটি বিমানের সময় লাগে ৩০ মিনিটের মতো।
স্থানীয় গণমাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে গুয়ানঝোউ না পৌঁছানো নিয়ে প্রতিবেদন করায় বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে আশঙ্কা দেখা দেয়। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২২ মিনিটের পর ফ্লাইটরাডার-২৪ বিমান থেকে কোনো তথ্য পায়নি।
ব্লুমবার্গ বলছে, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কোনো ফ্লাইটের শব্দের গতিতে ভ্রমণকে (দুর্ঘটনার পর) তদন্তকারীদের কাজকে বেশ জটিল করে তুলতে পারে। কারণ এটি (শব্দের গতিতে চলাচল) প্রমাণ মুছে ফেলতে পারে এবং বিরল হলেও এটি বিমানের ডেটা ও ভয়েস রেকর্ডারগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। যদিও এসব সরঞ্জাম বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনা সহনীয় হিসেবেই ডিজাইন করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অ্যাস্ট্রোনটিক্স এবং অ্যারোনটিক্সের অধ্যাপক জন হ্যানসম্যান চীনা বিমানের গতি সম্পর্কে ব্লুমবার্গের হিসাবটি পর্যালোচনা করেছেন।তিনি বলেছেন, প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে বিধ্বস্ত হওয়ার আগে বিমানটি শব্দের গতির কাছাকাছি গতিতে ভ্রমণ করছিল বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এটি খাড়াভাবে নিচের দিকে নেমে আসছিল।
এমনিতে চীনা বিমান চলাচলকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অতীত নিরাপত্তা ইতিহাস ভাল। চীনে সর্বশেষ বড় বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ১২ বছর আগে ২০১০ সালের আগস্ট মাসে। হারবিন থেকে আসা একটি বিমান ইচুনে বিধ্বস্ত হলে ৪২ জনের প্রাণহানি ঘটে।