ভেঙ্গে গেছে কালুরঘাট সেতুর রেলিং, উদাও বেষ্টনী গাছ: যে কোন সময় দুর্ঘটনার শঙ্খা
মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন খালেদ, বোয়ালখালী প্রতিনিধি: দুর্ভোগের যেন শেষ নেই কালুরঘাট সেতুর। লক্ষ লক্ষ পথচারির যোগাযোগের মাধ্যম এ একটা সেতু। এই সেতুর মধ্যমে প্রতিদিন কয়েক লাখ মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে থাকেন। চট্টগ্রাম শহরের সাথে সংযুক্ত এই সেতুটি বোয়ালখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের কয়েক লাখ মানুষ ব্যবহার করে কর্মস্থলে যান। একমুখি সেতু হওয়ায় একপাশ থেকে গাড়ি উঠলে অন্যপাশে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া অধিকাংশ মানুষ পায়ে হেটেই ব্রিজ পার হয়। এতে অনেক সময় দুর্ঘটনার স্বিকার হয়ে থাকেন। সেতু পার হতে গিয়ে কত মানুষ যে মৃত্যু বরণ করেছে তার সঠিক হিসাব নেই। সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর মাঝখানে রেলিং ভেঙ্গে পড়ে আছে অনেকদিন ধরে, ভেঙ্গে গেছে বেষ্টনীর অধিকাংশ গাছ। এতে করে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। গত (১৩-২৩ জুলাই) রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ১০দিন সেতু বন্ধ রেখে ৫২ লক্ষ টাকার সংস্কার করা হয়েছিলো যা শুধু মাত্র লোক দেখানো সংস্কার বলে ক্ষোভ জানিয়েছিলে অনেকেই। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে গত ২১ জুলাই বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রাম এর জেনারেল ম্যানেজারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এডভোকেট সেলিম চৌধুরী। এই সেতু নিয়ে দুর্ভোগের শেষ নেই মানুষের, নতুর সেতুর জন্য কয়েকযুগ ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসলেও অদৃশ্য কারণে তা এখনো বাস্তবে রূপ নেয়নি। অথচ প্রতি বারেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে এই সেতুটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। জানা যায়, ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বার্মা ফ্রন্টের সৈন্য পরিচালনা করার জন্য কর্ণফুলী নদীতে ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ১৯৩০ সালে ব্রুনিক অ্যান্ড কোম্পানি ব্রিজ বিল্ডার্স নামে একটি সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করে। মূলত ট্রেন চলাচলের জন্য ৭০০ গজ লম্বা সেতুটি ১৯৩০ সালের ৪ জুন উদ্বোধন করা হয়। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পুনরায় বার্মা ফ্রন্টের যুদ্ধে মোটরযান চলাচলের জন্য ডেক বসানো হয়। দেশ বিভাগের পর ডেক তুলে ফেলা হয়। পরে ১৯৫৮ সালে সব রকম যানবাহন চলাচলের যোগ্য করে সেতুটির বর্তমান রূপ দেওয়া হয়। বৃটিশ আমলে নির্মিত ব্রিজটির রয়েছে ২টি এব্যাটমেট, ৬টি ব্রিক পিলার, ১২টি স্টীল পিলার ও ১৯টি স্প্যান।