বোয়ালখালী পল্লি বিদ্যুতের কয়েকগুণ বৃদ্ধি বিলে ক্ষোভে ফুসছে এলাকাবাসি

Share the post

মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন খালেদ, বোয়ালখালী প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের কারণে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে সারাদেশের মানুষ এক প্রকার অসহায়ত্বে মতোই দিনযাপন করছেন। দিনে এনে দিনে খাওয়া কর্মজীবি মানুষগুলিই এই দূর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ। সরকারি বেসরকারি ত্রাণ দিয়ে কয়দিনইবা সংসার চলে। তবুও এতো সিমাহীন কষ্টের মধ্যেও কষ্টগুলি আড়ালে রেখে কর্ম খুজে খুজে মেহনত করে পরিবারের লোকদের মুখে একমুঠো ভাত তুলে দেয়ার প্রাণপণ চেষ্টা অনেকের। এই সিমাহীন কষ্টের মধ্যেও রেহায় নেই বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল দেয়া থেকে। খেতে পাক আর নাই পাক বিল কিন্তু পরিশোধ করতেই হবে। যদিওবা গ্যাসবিল নিয়ে তেমন কারো কোন অভিযোগ পাওয়া না গেলেও বোয়ালখালী পল্লি বিদ্যুৎ এর বিল নিয়ে রয়েছে প্রায় সব গ্রাহকের অভিযোগ। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ক্ষোভ জানিয়েছেন অনেকেই। কামরুদ্দিন বাদশা নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমার প্রতি মাসে বিল আসে ৫০০ থেকে ৯৫০ টাকার মধ্যে কিন্তু গত মাসের বিল দেয়া হয়েছে ১৯৫০ টাকা। আরশাদুল আলম বলেন, আমার ঘরে প্রতি মাসে বিল আসে ১৩০০/১৪০০ টাকা কিন্তু এবার আসলো ৩৭০০ টাকা। মহসিন নামের আরেক ব্যক্তি জানিয়েছেন আমাকে ৩ মাসের বিল এক সাথে দেয়া হয়েছে আবার গত ২ মাসের বিল আলাদা আলাদা করে দেয়া হয়েছে এটা কোন ধরণের যুক্তিকতা। খালেদ নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, আমার গত ৩/৪ মাস ৯০০ থেকে ১২০০ মধ্যে বিল আসলেও কিন্তু এই মাসে বিল দেয়া হয়েছে ৩৬০০ টাকা। বিদ্যুৎ বিলের এতো গড়মিল কেন? এই মহামারিতে জনসাধারণের সাথে এই তামাশা কেন? এভাবে যদি বিল বৃদ্ধি করা হয় তাহলে খেটে খাওয়া মানুষগুলির কি অবস্থা হবে। এস কে তারেক খান নামের একজন বলেন, প্রায় সবার বিল ৩/৪ গুন বৃদ্ধি করে দেয়া হয়েছে কিন্তু কারো বিলতো কম দিতে দেখলামনা। এই মহামারিতে সাধারণ মানুষদের উপর এমন অমানবিক আচরণ কেন? দিনে ৩/৪ বার বিদ্যুৎ চলে যাই একেকবার আসে ৩০ থেকে ৫০ মিনিট পরে তার উপর বিলের যদি এমন অবস্থা হয় তাহলে কেমন লাগে। এছাড়াও বোয়ালখালীতে দিন দিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারিভাবে অফিস ব্যাংক শপিংমলসহ সবস্থানে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার কথা বললেও বোয়ালখালী পল্লি বিদ্যুৎ এর অফিসে গিয়ে দেখলাম উল্টো চিত্র। সামাজিক দুরত্বের কোন ব্যবস্থায় তারা করেনি। কোন প্রকার স্বাস্থ্যবিধি তারা মানছেননা। এর ফলে করোনা আক্রান্ত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভবনা। এর দায়ভার কি পল্লি বিদ্যুৎ অফিস নেবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা বলেন, আমার ঘরে কোন পুরুষ নাই। স্বামি ও ছেলে দেশের বাইরে থাকে একেতো বাজার করতে এক কষ্ট হয় তার উপর বিদ্যুৎ বিল আসলো অনেক বেশি। অফিসে ফোন করলাম ওরা বললো মিটারের রিডিং এর ছবি ও ভিডিও করে নিয়ে যাবার জন্য। আমার প্রশ্ন হচ্ছে রিডিং এর ছবি ও ভিডিও করে অফিসে নিয়ে যাবার দায়িত্ব কি গ্রাহকের নাকি অফিস কর্মকর্তাদের। ঘরে ঘরে এসে যদি বিল দিয়ে যেতে পারে তাহলে ঘরে ঘরে এসে রিডিং কেন লিখতে পারবেনা। গ্রাহক কি বিল পরিশোধ করছেনা। এছাড়াও কমবেশি প্রায় সবার বিলেই গত মাসের চেয়ে এই মাসে ৩/৪ গুন বৃদ্ধিতে বিল করা হয়েছে যার কারণে এই লকডাউনে অসহায় খেটে খাওয়া মানুষদের মধ্যে একটি বাড়তি চাপ বলে অনেকেরই মতামত। বোয়াখালী পল্লি বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির পরিচালক আশরাফ উদ্দিন কাজল বলেন, বিষয়টি অনেকের মুখে শুনেছি। সমাধাণের জন্য পল্লি বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেব। এবিষয়ে জানতে চাইলে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারের ম্যানেজার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, লকডাউনের কারণে অফিসের কর্মকর্তা কম থাকায় ঘরে ঘরে গিয়ে মিটারের রিডিং নিতে পারেনি বলে এই সমস্যার সম্মুখিন হয়েছে। এই সমস্যা সারা দেশে হচ্ছে তবে কাওকে যদি অতিরিক্ত বিল প্রদান করা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে কারো থেকে এক টাকাও বেশি নেয়া হবেনা এবং বিল সংশোধন করা হবে। সামাজিক দুরত্ব না মানার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের সব অফিসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে তারপরও বোয়ালখালীতে যদি মানা না হয় তাহলে সেবিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ রাউজান এর ধর্ষণবিরোধী মশাল মিছিল

Share the post

Share the postমিলন বৈদ্য শুভ,রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : lkসাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী সংগঠিত ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াও এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশব্যাপী অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় ধর্ষকদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাউজান। গত মঙ্গলবার, ১১ মার্চ রাতে রাউজান পৌরসভার গহিরা চত্বর থেকে মশাল মিছিল […]

চট্টগ্রামে প্রশাসন সামলাচ্ছেন ১৯ নারী

Share the post

Share the postচট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়ে প্রশাসন সামলাচ্ছেন ১৯ নারী। যারা নিজ নিজ দপ্তরে কেউ অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) পদে দায়িত্ব পালন করছেন শারমিন জাহান। বিভাগের ১১ জেলায় সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিজেকে সামিল রেখেছেন।প্রশাসন ক্যাডারের ২১তম […]