বোয়ালখালী থানার ওসি আবদুল করিম করোনা মোকাবেলায় নির্ঘুম রাত কাটিয়ে সর্বক্ষণ নিরলসভাবে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন
মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন খালেদ (বোয়ালখালী প্রতিনিধি): করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বজুড়ে চলছে মহামারি দূর্যোগ। এতে করে দেশব্যাপী একপ্রকার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জনজীবন।
বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষগুলিই বেশি কষ্টের মধ্যে দিন পার করছেন। এই কষ্টের দিন কবে শেষ হবে তা জানা নেই কারো। সরকারি নির্দেশনা রয়েছে অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য, যার ফলে কাজ করতে না পেরে খেটে খাওয়া মানুষগুলিকে দূর্ভোগে পড়তে হয়। আর এই দূর্ভোগে পড়া মানুষের জন্য সরকার দেশব্যাপী বিনামূল্যে খাদ্যদ্রব্য দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও

সরকারের পক্ষ থেকে বেশকিছু প্রদেক্ষেপ নেয়া হয়েছে জনসাধারণের জন্য। সরকারের এই প্রদেক্ষেপ যথাযতভাবে বাস্তবায়নে কাজ করছেন সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ। বিশেষ করে এই দূর্যোগে পুলিশের ভুমিকা অতুলনীয়। করোনায় মৃত্যুবরণ করা ব্যক্তিকে স্বজনরা রেখে পালিয়ে যাওয়া সেই ব্যক্তিকে দাফন করা, অসহায়দের খাদ্যদ্রব্র সামগ্রি পৌছে দেয়া, অনাহারির মুখে খাবার তুলে দেয়া, জনগণের নিারপত্তায় সর্বদা মাঠে ময়দানে কাজ করাসহ সবরকমের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ২৪ ঘন্টা যা ইতিমধ্যেই দেশের মানুষ দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। অর্জন করেছেন মানুষের ভালোবাসা। আর তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল করিম যিনি নির্ঘুম রাত কাটিয়ে সর্বক্ষণ বোয়ালখালীবাসিকে নিরলসভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বোয়ালখালীবাসির নিরাপত্তায় নিজের জীবনের শ্রেষ্ঠ মূহুর্তগুলি অতিবাহিত করছেন। যে কোন স্থান থেকে সমস্যার খবর পেয়ে মুহুর্তে ছুটে গিয়ে সমাধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

সরকারি কর্মকর্তার এমন তৎপর কর্মকান্ডে খুশি বোয়ালখালীর জনগণ। সর্বত্র প্রশংসিত হচ্ছেন সকলের কাছে। বোয়ালখালীর করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে অফিসার ইনচার্জ আবদুল করিম বলেন, বোয়ালখালীতে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মানুষকে সর্বদা সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম-৮ আসনের মাননীয় সংসদ আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দিন আহমদের সহযোগীতা ও দিক-নির্দেশনা মতো মানুষের সেবায় সর্বক্ষণ কাজ করে যাচ্ছি। মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভার থেকে জনগণকে সচেতন করা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। তবে আমরা যে যুদ্ধে নেমেছি সেযুদ্ধে জয়ী হতে হলে জনগণকেও সচেতন হতে হবে। মানুষকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবেনা। করোন মোকাবেলায় কি কি প্রদেক্ষেপ নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বোয়ালখালীর করোনা পরিস্থিতি প্রথমে ভালো থাকলেতো এখন রোগির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে আমরা প্রথম থেকেই সবধরণের প্রত্তুতি নিয়ে রেখেছি। শুরু থেকে থানার অফিসারদের নিয়ে জনগণকে সচেতনতায় মাইকিং করা, লিপলেট বিতরণ, মসজিদের ইমামদের মাধ্যমে সচেতন করা, থানার অফিসারদের জন্য মাস্ক হ্যান্ড গ্লাভস স্যানিটাইজারসহ প্রয়োজনীয়

জিনিসের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও চট্টগ্রাম জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক পিপি এম স্যারের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জীবানু নাশক চেম্বার উরংরহভধপঃরড়হম ঈযধসনবৎ এবং ওহভৎধবফ ঞযবৎসড়সবঃবৎ বসানো হয়। থানার পক্ষ থেকে অসহায়দের সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক পিপি এম স্যারের পক্ষ থেকে এবং থানার পক্ষ থেকে প্রায় ২ হাজার অসহায় মধ্যবিত্ত মানুষদের মাঝে উপহার দেয়া হয়েছে এবং এটি অব্যাহত রয়েছে। করোনার মধ্যে অন্যান্য অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িতদের শাস্তি প্রদানে অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয়ে আমাদের নিয়মিত অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে। ইতিম্যে বেশ কয়েকজন ইয়াবা বিক্রেতা, খুনি মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। এছাড়াও সম্প্রতি পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে এক শীর্ষ সন্ত্রাসিও নিহত হয়। সরকারি ত্রাণ বিতরণে কোন অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এধরণের কোন অভিযোগ পাইনি। আগামিতে যদি অভিযোগ পায় তাহলে যথাযতভাবে তার বিরোদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে তাই এবিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার প্রসংগে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ করতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি রয়েছে সেটা মানতে হবে, পরিবারের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তা রয়েছে তবুও দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি সেটাই জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া বলে মনে করছি। জন্ম যখন হয়েছে একদিন মরতেও হবে। তবে মৃত্যুর পরেও যেন মানুষ সম্মাণের সাথে স্বরণ করে সেজন্যই দেশ ও মানুষের কল্যাণে সর্বক্ষণ কাজ করে যেতে চাই। তাহলেই জীবনের স্বার্থকতা বলে মনে করি। করোনায় কাজ করার ক্ষেত্রে অনুভুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সর্বপ্রথম মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে হাজারো শোকরিয়া আদায় করছি যিনি আমাকে সুস্থতা দান করেছেন। গভীর শোক প্রকাশ করছি করোনায় আমাদের সহকর্মি যারা দেশ ও জনগণের সেবা করতে গিয়ে কর্তব্যপালনকালে মৃত্যুবরণ করেছেন। সাথে সাথে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। যিনি আমাদের কাজের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে প্রশংসার মাধ্যমে আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন দায়িত্ব আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। এবং দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে জনগণের সেবায় সর্বক্ষণ নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন সেজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সর্বশেষ জনসাধারণের উদ্দেশ্যে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল করিম বলেন, আমি সকলের কাছে আবারো অনুরোধ করবো একটু কষ্ট হলেও অহেতুক ঘুরাফেরা না করে ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন, আপনাদের সেবায় আমরা সর্বাত্বক কাজ করে যাচ্ছি। এই যুদ্ধ হার মানার নয় মনোবল শক্ত রেখে ধৈর্য্য ধরে সামনে এগিয়ে যাবার। আসুন আমরা সরকারের নির্দেশনা মেনে চলি, ঘরে থাকি, সুস্থ থাকি, সবাইকে নিয়ে বেঁচে থাকি। তাহলে খুব শিঘ্রই এই মহামারি থেকে রক্ষা পেয়ে আবারো একটি আলোকিত দেশ পাবো সেই প্রত্যাশায় করি। অফিসার ইনচার্জের কর্মকান্ডের প্রতিক্রিয়ায় বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম জাহাঙ্গির বলেন, বোয়ালখালী অফিসার ইনচার্জ একজন সত্যিকারের দেশ প্রেমিক। করোনা পরিস্থিতিতে তিনি যেভাবে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন তা সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। কয়েকদিন আগে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাথে তার সাক্ষাত হয়েছিলো সেসময় তিনি আমাদের জানিয়েছেন বোয়ালখালীকে মাদক সন্ত্রাসমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন ইতিমধ্যে তার প্রমাণ আমরা দেখতে পারছি। আমি তার সর্বাঙ্গিক সফলতা কামনা করছি।