

মিয়ানমারে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলেছে গণতন্ত্রপন্থি বিদ্রোহী জনতা। জান্তা সেনা আর জনতার মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও সংঘাতের ঘটনা ঘটছে। তবে বিদ্রোহীদের দমনেও উঠে পড়ে লেগেছে জান্তা সরকার। স্থল অভিযানের পাশাপাশি এবার বিমান-হেলিকপ্টারেও হামলা চালাচ্ছে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে। পিছু হটছে না বিদ্রোহী যোদ্ধারাও। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর ওপর বেশ কিছু সফল আক্রমণ চালিয়েছে তারা। শুধু তাই নয়, নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডার বাড়াতে সেনাদের আটক করে গোলাবারুদ ছিনিয়ে নিচ্ছে বিদ্রোহীরা।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির কুখ্যাত সেনাবাহিনী। এরপর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করে সাধারণ জনগণ। সেই সঙ্গে লড়াই জোরদার করে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের সশস্ত্র গোষ্ঠী। এসব গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দিচ্ছে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। গড়ে তুলেছে ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ)। ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ছায়া সরকারের (ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট) পক্ষে লড়ছেন এর সদস্যরা। সর্বাত্মক এই প্রতিরোধ আন্দোলন ভেস্তে দিতে সব কৌশলই প্রয়োগ করছে জান্তার সেনা। গণতন্ত্র উদ্ধারের এ বিক্ষোভ দমনে এখন পর্যন্ত এক হাজার তিনশ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
এএফপি জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে রাজ্যে রাজ্যে বিদ্রোহীদের ওপর অভিযান জোরদার করেছে সেনাবাহিনী। এসব অভিযানে সামরিক হেলিকপ্টার ও জেটবিমান ব্যবহার করছে তারা। সর্বশেষ শুক্রবার মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্য সাগাইংয়ে পিডিএফ যোদ্ধাদের একটি মিটিং চলাকালে বিমান হামলা চালায় তাতমাদোর বিমান সেনারা। গ্রামবাসীরা জানান, বিদ্রোহীদের সঙ্গে চলমান লড়াইয়ের মধ্যে এদিন সেনাবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার সাগাইংয়ে এসে নামে এবং শত শত সেনা মোতায়েন করে। এই সময় একটি বিমান আকাশ থেকে গ্রামের বেশ কয়েকটি ভবনে নির্বিচার গুলি চালায়। আরেক গ্রামবাসীর মতে, এদিন অভিযানে অন্তত পাঁচটা হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে। হেলিকপ্টারগুলো ৬ হাজার অধিবাসীর গ্রামটির ওপর ঘুরে ঘুরে গুলিবর্ষণ করে। এতে পিডিএফের দুই নেতা ও সাত গ্রামবাসী নিহত হয়। সেনা সরকারের মুখপাত্র জ মিন তুনও এই অভিযানের কথা স্বীকার করেছেন।