বিদ্রোহী প্রার্থীদের বৃহস্পতিবার ৪টার মধ্যে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে অংশ নেয়া বিদ্রোহী প্রার্থীদের আগামিকাল বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) বিকেল ৪ টার মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৮ মার্চ) দুপুরে নগরের চার তারকা মানের হোটেল দি পেনিনসুলায় বিদ্রোহী ডেকে নিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের এই আল্টিমেটাম দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। অন্যথায় উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কোনো দায়-দায়িত্ব নেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে বুধবার সকাল থেকে নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে ফোন দিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীদের হোটেল পেনিনসুলায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে যাওয়া ১৯ বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে রূদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও সদস্য সচিব সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এসময় গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন কর্মকর্তাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে একুশে পত্রিকাকে জানান, ‘সকাল থেকে উপুর্যপুরি ফোন দিয়ে আমরা ১৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে ডেকে নেওয়া হয় পেনিনসুলায়। দুই নেতা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করবেন এবং একপর্যায়ে আগামিকাল ৪টার মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে প্রত্যাহার করতে বলেন।’
নেতাদের আল্টিমেটামের জবাবে প্রার্থীরা তেমন কিছুই বলেননি জানিয়ে এক বিদ্রোহী প্রার্থী একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘সব বিদ্রোহী প্রার্থী প্রত্যাহার করলে আমিও করবো। তা না হলে যতই বাধা আসুক, আমি নির্বাচনের মাঠে থাকবো। একমাত্র আল্লাহ এবং আমার প্রিয় এলাকাবাসীই আমার রক্ষাকবচ।’
এর আগে গত সোমবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় প্রথম দফায় আরো ১২ বিদ্রোহী প্রার্থীকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের কার্যালয়ে। গোয়েন্দা সংস্থার একজন সিনিয়র কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা চলে বলে জানান বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক প্রার্থী।
একুশে পত্রিকাকে কয়েকজন প্রার্থী জানান, গোয়েন্দা সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তাটি বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন এই বলে যে, দলের জন্য আপনাদের অবদান ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবেও জিতে আসার মতো যোগ্যতা, অবস্থান আপনাদের আছে। যেহেতু দলীয় সমর্থন দেওয়া হয়েছে তাই অন্তত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে প্রত্যাহার করতে তাদেরকে অনুরোধ জানানো হয়।
ওই বৈঠকে বিদ্রোহী প্রার্থীরা সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়ে বলেন, দয়া করে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দেখুন-দেখুন প্রার্থী মনোনয়ন ও বাছাইয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল কিনা। নিরপেক্ষতা দিয়ে যাচাই করুন আমাদের অবস্থা দল সমর্থিত প্রার্থীর চেয়ে খারাপ কিনা। নিরপেক্ষ তদন্তে নিশ্চয় প্রার্থী মনোনয়নে মেজর সমস্যাগুলো বেরিয়ে আসবে।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের বক্তব্য আমলে নিয়ে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয় বলে বৈঠক সূত্র একুশে পত্রিকাকে জানিয়েছে।