

মো: সবুজ হোসেন রাজা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) এর ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সাধারণ সভা উদযাপিত হয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাবে, বুধবার। মফস্বল সাংবাদিকদের অধিকার, নিরাপত্তা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাওয়া এই সংগঠনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও সম্মানিত অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমএসএফ-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমেদ আবু জাফর।প্রারম্ভিক পর্বে জাতীয় সংগীত ও সংগঠনের নিজস্ব গান পরিবেশিত হয় এবং মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য মোস্তাক আহমেদ খান, রফিকুল ইসলাম, আমির হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যমুনা টিভির প্রতিনিধি দুলাল সাহা, দ্য এক্সাম্পলের সম্পাদক মিজানুর রহমান মোল্লা, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন, জসীম উদ্দীন চাষী, জহুরুল হক জহির, ড. তাওহীদ হাসান, খোকন আহমেদ হীরা, গাউছ উর রহমান, সৈয়দ খায়রুল আলম, শফিকুল ইসলাম, নুরুল হুদা বাবু, তারিক লিটু, জাকির হোসেন, শাহাদাত হোসেন শাওন, আজাদ হোসেন আওলাদ মিয়া, ফেনী শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক চৌধুরী, হাসনাত তুহিন, মো. সাদ্দাম গনি, মোস্তাফিজুর রহমান মিরাজ, ছাতক শাখার সভাপতি মুশাহিদ আলী, সাভারের ইউসুফ আলী খান, নাজমুল হক, ভুইয়া কামরুল হাসান সোহাগ এবং সাংবাদিক ও গবেষক এস এস রুশদী।
সঞ্চালনায় ছিলেন মোঃ আল মাসুম খান, মিডিয়া ও প্রচার উপ-কমিটির সমন্বয়ক।
বক্তারা বলেন, বিএমএসএফ দেশের একমাত্র সাংবাদিক সংগঠন যা ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আর্থিক সংকট থাকা সত্ত্বেও সংগঠনটি সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়াচ্ছে নিয়মিত, বিশেষত নির্যাতিত, মামলা-হামলার শিকার সাংবাদিকদের সহায়তায়। তারা জানান, ট্রাস্টি বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ভবিষ্যতে ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিকদের আর্থিক সহায়তা, শিক্ষাবৃত্তি ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
সভায় বক্তারা বিএমএসএফ-এর ১৪ দফা দাবি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন, নিয়োগ ও বেতন কাঠামো নিশ্চিতকরণ এবং সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নে সরকারের প্রতি জোর দাবি।
সভাপতির বক্তব্যে আহমেদ আবু জাফর বলেন, গত ১৩ বছর ধরে বিএমএসএফ-কে সন্তানের মতো লালন করেছি। প্রান্তিক সাংবাদিকদের আর্থিক, সামাজিক ও পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের অঙ্গীকার। ভবিষ্যতে সংগঠনটি আরও বৃহৎ পরিসরে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করে যাবে।
অনুষ্ঠানে বিএমএসএফ-এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানানো হয়। সেইসঙ্গে নিয়োগ ও বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন, নির্যাতিত সাংবাদিকদের জন্য আইন ও অর্থ সহায়তা, সন্তানদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি ও প্রশিক্ষণ, ৮ বিভাগে সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা চালুর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
সাংবাদিকদের পেশাগত মর্যাদা ও স্বাধীনতা রক্ষায় দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সোচ্চার ভূমিকা রাখার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
বিএমএসএফ বিশ্বাস করে, প্রান্তিক সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা টেকসই হতে পারে না। সে লক্ষ্যেই সংগঠনটি আগামীতেও সাহসিকতার সঙ্গে সাংবাদিকদের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।