ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গোপসাগর পার হচ্ছেন সন্দ্বীপবাসী

চট্টগ্রাম( সন্দ্বীপ) : অনুন্নত এবং ঝুঁকিপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক প্রকার দুর্বিষহ করে তুলেছে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার লাখ লাখ মানুষের জীবনযাত্রা। জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল বঙ্গোপসাগরের ভয়ংকর সন্দ্বীপ চ্যানেল অতিক্রম করতে হচ্ছে দ্বীপের বাসিন্দাদের। ঘাট থেকে জেটিতে পৌঁছাতে হাঁটতে হচ্ছে মাইলের পর মাইল।
চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রথমে সিটি গেইট। এরপর সেখান থেকে জেলার সীতাকুণ্ডের কুমিরা। এরপর দীর্ঘ জেটি পেরিয়ে উঠতে হবে সন্দ্বীপগামী যে কোনো স্পিড বোটে। কোনো রকমে ১৮ কিলোমিটার সাগর পাড়ি দিয়ে পৌঁছার পর, আবার ফিরতি পথ আরো ভয়ংকর। সন্দ্বীপ অংশের জেটি থেকে নেমে অন্তত এক থেকে দেড় কিলোমিটার হাঁটতে হবে কেওড়া গাছের ডাল দিয়ে তৈরি বিশেষ জেটিতে। আর না হয় কাদামাটি। এভাবেই বছরের পর বছর চট্টগ্রাম আসা-যাওয়া করছে সন্দ্বীপের ৫ লাখের বেশি বাসিন্দা।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, সারাবছরই কষ্ট হয়, তবে বর্ষাকালে বেশি কষ্ট। তখন পানিতে নেমে চলাচল করতে হয়। খুব ঝুঁকি থাকে।
এখানেই শেষ নয়। বর্ষা মৌসুমে সাগর উত্তাল থাকায় কখন বোট ছাড়বে তার কোনো নির্দিষ্ট সময় থাকে না। অনেকটা আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে চলতে হয় এখানকার মানুষদের। আর শীত কিংবা গ্রীস্ম মৌসুমে সকাল ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটার মধ্যে চলে স্পিডবোট। এরপর যতোই জরুরি হোক চলাচলের কোনো পথ নেই। এ ধরনের অনুন্নত এবং ঝুঁকিপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থার কবলে পড়ে চরম দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে দ্বীপবাসীর জীবনযাত্রা।
আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বর্ষাকালে সাগরে চলাচল করতে খুব ভয় লাগে। এখানে বিআইডব্লিউটিসির একটা স্পিডবোর্ড আছে, যেটা অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
আগে বিআইডব্লিউটিসির মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপ রুটে তিনটি যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল করলেও তা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে জোড়াতালি দিয়ে চলা মেয়াদোত্তীর্ণ স্পিড বোটগুলো এখানকার মানুষের ভরসা।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম বলেন, আঠারো কিলোমিটার সাগরের মধ্যে বিআইডব্লিউটিসি যে স্টিমারগুলো চালায়, তারা লস দিয়ে চালায়। কারণ একটা স্টিমারে ৩-৪শ’ লোকের দরকার হয়, এ জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয় ৩-৪ ঘণ্টা।
প্রায় ৫০০ বর্গ কিলোমিটারের সন্দ্বীপের অবস্থান বঙ্গোপসাগরের উত্তর-দক্ষিণে। রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোর মধ্যে এগিয়ে রয়েছে সন্দ্বীপের প্রবাসীরা।