জামালপুরে মাদকাসক্ত বড় ছেলেকে খুনের রহস্য উদঘাটন- পুলিশ সুপারের প্রেস বিফিং
এমরান হোসেন জামালপুর প্রতিনিধিঃ জামালপুরে ঈদ-উল-আযহার পরের দিন অজ্ঞাত একটি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ছোট ছেলে ও সাথে আরোও দুইজনকে নিয়ে বড় ছেলেকে খুন করেন পিতা। এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। জামালপুরের পুলিশ সুপার মো: দেলোয়ার হোসেন বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং-এ জানান, গত (২ আগষ্ট) ঈদ-উল-আযহার পরের দিন সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের পূর্বপাড়দিঘুলী এলাকায় একটি কালভার্টের পাশে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। লাশটির ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় সনাক্ত হলে নিহতের পিতা পরেরদিন (৩ আগষ্ট) জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে এসে তার বড় ছেলে বলে নিশ্চিত করেন। নিহত আল আমিন শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার কাজীগলি গ্রামের মো: আমিরুল ইসলামের বড় ছেলে। এরপর নিহতের পিতা গত (৫ আগষ্ট) বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। হত্যার কারণ অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে নিহত আল আমিন মাদকাসক্ত ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত (১০ আগষ্ট) নিহতের ছোট ভাই আরিফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকা হতে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ছোট ভাই জানায় মাদকাসক্ত হওয়ায় বড় ভাইকে খুন করার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী (১ আগষ্ট) আগে থেকেই তার পিতা মো: আমিরুল ইসলাম, নানা মো: আক্তারুজ্জামান দুদু (৪৮) ও রুবেল মিয়া (২০) জামালপুর সদর উপজেলার ছোনটিয়া এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে বাবাকে বাড়ি নিয়ে আসার কথা বলে ছোট ভাই আরিফুল ইসলাম বড় ভাই আল আমিনকে মোটরসাইকেলে করে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। ঘটনাস্থলে আগে থেকেই অবস্থান নেয়া নিহতের পিতা ও অপর দুইজন আল আমিনের হাত-পা বেধে গলায় গামছা পেচিয়ে হত্যা করে ধান খেতে সেখানেই ফেলে রেখে যায়। আরিফুল ইসলামের কাছ থেকে হত্যার স্বীকারোক্তি পাওয়ার পর হত্যাকান্ডে জড়িত জামালপুর সদর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মো: আক্তারুজ্জামান দুদু ও কাষ্টসিংগা গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে রুবেল মিয়াকে (১১ আগষ্ট) তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত তিনজনেরই ঘটনার একই রকম বর্ণনায় জানা যায় নিহতের পিতা এই হত্যাকান্ডে জড়িত। পুলিশ সুপার আরো জানান, আদালতে সোপর্দের পর ওই তিনজনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের পিতা মামলা দায়ের করলেও সে এখন আসামী হয়ে যাবে, তাকে গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।