চরফ্যাশনের বিচ্ছিন্ন দ্বীপে নতুন লঞ্চ সার্ভিস অর্থনীতি ও পর্যটনে নতুন সম্ভাবনা
মোঃ সামিরুজ্জামান,প্রতিনিধি চ্যানেল ২১,ভোলা : ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন চারটি দ্বীপে (ঢালচর, চরকুকরি-মুকরি, চরপাতিলা ও চরমন্তাজ) যাতায়াতে নতুন ৫টি লঞ্চ চালু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের মাঝে। আগের তুলনায় এখন দ্বীপগুলোর সঙ্গে নৌ যোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে। এতে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে অর্থনীতি ও পর্যটন খাতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ আইচা থানার চরকচ্ছপিয়া লঞ্চঘাট থেকে প্রতিদিন ৪টি রুটে ৯টি লঞ্চ চলাচল করছে। যাত্রী পারাপারে রয়েছে আরও ১০টি স্পিডবোট। আগে প্রতিটি দ্বীপে দিনে মাত্র একটি লঞ্চ চলত। নির্ধারিত সময় না পেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো যাত্রীদের। এখন এক ঘণ্টা পরপর লঞ্চ চলাচল করছে।
চরকুকরি-মুকরির বাসিন্দা মো. ফয়েজ বলেন, ‘এই দ্বীপে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক আসেন। আগে লঞ্চ কম থাকায় অনেক ভোগান্তি হতো। এখন নতুন লঞ্চ চালু হওয়ায় যাতায়াত সহজ হয়েছে।’স্থানীয় ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন, ‘ঢাকা থেকে পণ্য আনতে এখন আর সমস্যা হয় না। সময় বাঁচে, খরচও কমে গেছে।’চরপাতিলার বাসিন্দা রহিমা বিবি বলেন, ‘বর্ষায় ট্রলার চলে না। এখন নতুন লঞ্চ ও ট্রলার চালু হওয়ায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছানো সহজ হচ্ছে।’ঢালচর থেকে আসা যাত্রী শরিফ জানান, ‘একসময় একটাই লঞ্চ ছিল। এখন দুটি লঞ্চ চলায় ঢালচর যেতে সমস্যা হয় না। মৎস্যজীবীরা সহজেই মাছ বাজারে পাঠাতে পারছেন।’
চরকচ্ছপিয়া ঘাটে দেখা গেছে, ঢালচরের উদ্দেশ্যে এমএল ঢালচর, চরকুকরির উদ্দেশ্যে এমএল সুফিয়া, চরপাতিলার জন্য এমভি মাসরাহ এবং চরমন্তাজের উদ্দেশ্যে এমএল নিপু নামের লঞ্চগুলো ঘাটে প্রস্তুত। যাত্রীরা লঞ্চে উঠছেন, মালামাল তুলছেন।
এমএল ঢালচরের চালক মো. সোহাগ বলেন, ‘প্রতিদিন দুপুর ১টায় চরকচ্ছপিয়া থেকে লঞ্চ ছাড়ে, বিকেল ৩টায় ঢালচরে পৌঁছায়। জনপ্রতি ভাড়া ১২০ টাকা।’স্পিডবোটচালক সুমন বলেন, ‘চরকচ্ছপিয়া থেকে স্পিডবোটে ঢালচর যেতে ৩০০ টাকা, চরপাতিলা ২০০, চরমন্তাজ ২৫০ টাকা করে ভাড়া নেয়া হয়।’
নতুন দুটি লঞ্চের মালিক মো. সবুজ হাওলাদার বলেন, ‘দ্বীপবাসীর দুর্ভোগ দেখে নতুন দুটি লঞ্চ নামিয়েছি। যাত্রী ওঠানামার সুবিধার জন্য পল্টুনও বসানো হয়েছে।’দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘নতুন লঞ্চ চালু হওয়ায় ভোগান্তি কমেছে। যাত্রীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক।’