ওয়াজ নিয়ে সংসদে বিএনপি-আওয়ামী লীগ হট্টগোল

দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারের পক্ষ থেকে ওয়াজ মাহফিলে বাধা দেয়া হচ্ছে-বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদের এমন অভিযোগে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা। এনিয়ে সংসদ অধিবেশনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ দাবি করেন, দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের লোকরা সামাজিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। কিন্তু ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা তাফসির মাহফিল করতে গেলে আপত্তি আসছে। নিষেধাজ্ঞা আসছে। এটা আমাদের মুসলমানদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করছে।
তার এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামি কার্যকলাপে কোনো বাধার সৃষ্টি হচ্ছে না বলে জানান আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান পার্লামেন্টারিয়ান ও সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইসলাম আছে এবং থাকবে। বাংলাদেশে যাতে এটি কার্যকর হয়, এই ব্যবস্থা আমরা করে যাচ্ছি এবং বাংলাদেশ চিরদিনই মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষা করে চলবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি, তারা হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাইকে সমানভাবে সুযোগ দিই। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ইউনিয়ন, থানা, জেলা লেভেলে সব জায়গায় ওয়াজ নসিহত হচ্ছে, মাহফিল হচ্ছে। সেখানে আল্লাহর রাসূলের কথা বলা হচ্ছে। মানুষকে ইসলামের পথে আসার জন্য দীক্ষা দেয়া হচ্ছে। শুধুমাত্র জামাতিপন্থায় মানুষদের যাতে শিক্ষা-দীক্ষা না দেয়, এ দেশটাকে জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত করতে না পারে, সেটা ঠেকানোর জন্য আমরা অনেক সময় বলে থাকি, এটা যেন না হয়। কিন্তু ইসলামি কার্যকলাপে কোনো বাধার সৃষ্টি হচ্ছে না।
তার এ বক্তব্যের পর হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ সংবিধানের উদ্ধৃতিতে দিয়ে আগের মতোই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করলেন। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিমের অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। এটা তাদের একটি চিরাচরিত রাজনীতি, একই পন্থা। এর আগে তারা বলেছেন, ধানের শীষে ভোট দিলে বেহেস্তে যাওয়া যাবে। নৌকায় ভোট দিলে ইসলাম থাকবে না। বউ তালাক হয়ে যাবে। কোরআন এবং হাদিসের ব্যাখ্যায় কবে এই শব্দ বা বাক্য নাজিল হয়েছে, সেই ব্যাখ্যা কিন্তু হারুন অর রশীদ দিতে পারবেন না।’
হুইপ বলেন, ‘শনিবার ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনে ঢাকার মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য তিনি (হারুন অর রশীদ) হঠাৎ করে এমন একটি পয়েন্ট উত্থাপন করলেন, যার এই সংসদের কার্যক্রমের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নাই।’