আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরের উন্নয়ন ভাঙ্গা রাস্তা নিয়ে সর্বত্র সমালোচনা নেত্রকোনায়

Share the post
সোহেল খান দূর্জয়,নেত্রকোনা : নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরের উন্নয়ন ভাঙ্গা রাস্তা নিয়ে চরম বিরক্ত সাধারণ মানুষ। শুধু নেত্রকোনা জেলার প্রধান সড়ক নয় পাঁচটি পৌর এলাকার বেশির ভাগ উপ সড়ক এবং নেত্রকোনার প্রধান সড়ক রেকর্ড পরিমান ভাঙ্গা। স্থানীয়দের দাবী অতীতে কোনো সময় এতো ভাঙ্গা সড়ক দেখেনি তারা। এতে ভেস্তে গেছে নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম। তাই অন্তবর্তীকালীন সরকারের ইমেজ ধরে রাখতে দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী জানান সচেতন মহল।
নেত্রকোনা শহরের সাতপাই নেত্রকোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, নেত্রকোনায় প্রধান সড়কের এতো বেহাল অবস্থা আমি আগে কখনো দেখিনি। মানুষ রাস্তায় বের হলেই আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা করে। নারী পুরুষ সবাই শুধু ভাঙ্গা রাস্তা নিয়ে কথা বলে কারণ মানুষ সত্যিকার অর্থে রাস্তায় চলতে চরম অসুবিধায় পড়ছে। অথচ আমার জানা মতে সারা দেশের সব জেলার মধ্যে নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগ সরকারের বেশি উন্নয়ন কর্মকান্ড হয়েছে বলে শুনেছি। মানুষ কিন্তু সে গুলো নিয়ে কথা বলে না, শুধু রাস্তার সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
নেত্রকোনা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লিটন পন্ডিত বলেন,মানুষ দৃশ্যমান কাজে বিশ্বাসী বর্তমানে নেত্রকোনায় বিপুল উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে এটা সত্য কিন্তু সেই উন্নয়ন থেকে মানুষ এখনো সুবিধা পায়নি বরং মানুষ রাস্তা ঘাটে চলাচল করতে চরম অসুবিধায় পড়ছে সেটাই বেশি দেখছে। তাই সাধারণ জনগণ যে সমালোচনা করবে সেটাই বাস্তবতা। আমি মনে করি নেত্রকোনা শহরের প্রধান সড়ক যদি সড়ক বিভাগ নেত্রকোনা উন্নয়ন কতৃপক্ষকে হস্তান্তরও করে তাহলে উন্নয়ন কতৃপক্ষের দায়িত্ব ছিল সড়কটি সচল রাখা। আর সব রাস্তাতো কারো না তাহলে বাকি সড়ক গুলোর বেহাল অবস্থা কেন? সেটার কি জবাব দেবে সড়ক বিভাগ। আমার মতে আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জবাবদিহিতার অভাব ছিলো। মোট কথা আওয়ামী লীগ সরকার যতই উন্নয়ন কর্মকান্ড করুক না কেন মানুষ কিন্তু রাস্তাঘাট নিয়ে খুব বিরক্ত।
মোহনগঞ্জ পৌরসভা এলাকার মোহাম্মদ হোসেন বলেন,আমার বয়স (৫২) আমাদের সামনের সড়ক এক সময় মাটির ছিল পরে ইট বিছিয়ে গাড়ি চলতো এরপরে পাকা রাস্তা হয়েছে অনেক কিছুই দেখেছি তবে রাস্তার এরকম করুণ অবস্থা আগে কখনো দেখিনি এই হলো আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উন্নয়ন। জানিনা কর্তৃপক্ষ কি করে। তিনি বলেন,পৌর এলাকার বেশির ভাগ উপ সড়ক এতোই নাজুক মানুষ রাস্তায় বের হলেই মন্দ কথা বলে।প্রত্যেক মানুষ গাড়ি দিয়ে চড়লেই আওয়ামী সরকারের সমালোচনা করে নারী হউক আর পুরুষ হউক রাস্তা দিয়ে চলতেই আওয়ামী লীগ সরকারকে নিয়ে ব্যাপক আজে বাজে কথা বলে। আর বলারই কথা কারণ যদি ১০ মিনিটের রাস্তা পার হতে ১ ঘন্টা সময় লাগে তখন মানুষের শরীরের অবস্থা নাজুক হয়ে যায়। আর কি বলবো এই উপজেলায় একতরফা রাজত্ব করে গেছেন এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসান।তার কথার বাহিরে কেউ কিছু বলতে এতোদিন সাহস পায়নি। তিনি এই উপজেলায় উন্নয়নের নামে করে গেছেন লুটপাট।যা এখন হয়েছে সবাই মুখে মুখে বলছেন।
এদিকে কেন্দুয়া পৌরসভার সড়ক নিয়ে মানুষের মধ্যে বিরক্তির শেষ নেই যে একবার পৌরসভার রাস্তা দিয়ে আসে সে আর যেতে চায়না এবং পরে চায়ের দোকানে বসে ইচ্ছামতো আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে।
অন্যদিকে নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভা ও উপজেলার চন্ডিঘর ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা। স্বরণিকা স্কুল হতে কেরনখলা বাজার পযন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা খানাখন্দে ভরা।রাস্তায় গাড়ি চলে হেলেদুলে। পিচ উঠে বিভিন্ন জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়তই আসা-যাওয়া করছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ ছোট-বড় সব ধরনের যানবাহন। ভাঙা রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে রিকশা ও অটোরিকশার যাত্রীরা যেমন নাকাল হচ্ছেন,তেমনি প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে রাতে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির কোথাও পিচঢালাই উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। স্বরণিকা স্কুল হতে কেরনখলা বাজার পযন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা। এ নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয় এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী ব্যক্তিদের, এছাড়াও পৌরসভাবাসীর দূর্ভোগের কথা আর কি বলবো। রাতে পৌরসভার সড়ক দিয়ে চলাচল করা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে বলে জানালেন একাধিক অটোচালক।
এদিকে মদন পৌরসভা এলাকার বাসিন্দা অটোচালক হাবিবুল্লাহ বলেন, মদন পৌরসভার সকল সড়কে চলাফেরা করতে অনেক কষ্ট হয়। আমরা এই সব রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করি। ভাঙা রাস্তার কারণে গাড়ি প্রায়ই বিকল হয়ে যায়। বেশির ভাগ রাস্তা ভেঙে পিচ উঠে গর্তের কারণে অটো থেকে যাত্রীদের নামিয়ে তারপর গর্ত পাড় হতে হয়। রাতে চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়।পথচারী মামুনুর রশীদ বলেন, গ্রাম হতে মদন পৌর শহরে যেতে এই রাস্তা দিয়ে যেতে হয় অনেক কষ্ট পোহাতে হয়। হাঁটতে গেলেই হোঁচট খেতে হয়। এই সব রাস্তা অতিদ্রুত মেরামত করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ভুক্তভোগীরা।এ ব্যাপারে মদন পৌর শহরের স্থানীয়রা বলেন, পৌরসভার রাস্তা অনেক খারাপ অবস্থা। এই সব মেরামত করার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তারা বলেন, আমাদের এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসান এই উপজেলায় একতরফা রাজত্ব কায়েম করেছেন। এভাবেই উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছেন তিনি শতশত কোটি টাকা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

আনুগত্য মানে অন্ধ অনুসরণ নয়- অধ্যাপক মাসুদুর রহমান গিয়াস

Share the post

Share the postফাহাদুল ইসলাম, সোনারগাঁ : “আনুগত্য মানে অন্ধ অনুসরণ নয়; বরং সঠিক নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বাস, দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করা এবং দলীয় লক্ষ্য অর্জনে ঐক্যবদ্ধ থাকা” বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নারায়ণগঞ্জ জেলার তারবিয়াত সেক্রেটারি অধ্যাপক মাসুদুর রহমান গিয়াস। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সোনারগাঁ উপজেলা উত্তরের আয়োজনে রুকনদের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা, কার্যকারিতা ও সদস্যদের ব্যক্তিগত উন্নয়নের […]

নাইক্ষ্যংছড়িতে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হাতিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে ১৫ জন আহত: ৩ জনকে ঢাকায় প্রেরণ

Share the post

Share the postমীর কাশেম আজাদ,কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হাতিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন চিকিৎসকসহ বন বিভাগের ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতরা হলেন- কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ, ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন হাতেম সাজ্জাদ জুলকারনাইন ও গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মো. […]