শনাক্ত ছাড়ালো সাড়ে ৫ লাখ
দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার ঠিক এক বছরের মাথায় রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৫ লাখ ছাড়ালো। ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরো ৬০৬ জন। ফলে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৩০ জনে। একদিনে আরো ১১ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস (কভিড-১৯)। এ পর্যন্ত এই ভাইরাসটিতে মোট মারা গেছেন আট হাজার ৪৬২ জন।রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অরিতিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনা বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২১৯টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১১৮টি, জিন-এক্সপার্ট ২৯টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন ৭২টি। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৪ হাজার ৫৪ জনের। আর মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ৯২টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪১ লাখ ৪৬ হাজার ২০৫টি।
ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১০৩৭ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন পাঁচ লাখ ৩ হাজার ৩ জন।
এতে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার হয়েছে ৪.৩০ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৪০ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৫৪ শতাংশ।
গত বছরের ৪ এপ্রিলের পর ৯ জানুয়ারি সর্বপ্রথম শনাক্তের হার ৫ শতাংশের ঘরে নামে। এরপর ১৭ জানুয়ারি ৪ শতাংশের ঘরে আসে। তার পরের দুদিন সামান্য বেড়ে ৫ শতাংশ হারে রোগী শনাক্ত হয়। ২০ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত শনাক্তের হার থাকে চার শতাংশে। যদিও এর মাঝে একদিন এই হার ৩ শতাংশে নেমেছিল। এরপর ২৯ জানুয়ারি শনাক্ত হয় ৩.৭৬ শতাংশ। গত ৩১ জানুয়ারি রোববার শনাক্তের হার ৩.০২ শতাংশ। ৩ ও ৫ ফেব্রুয়ারিতে শনাক্তের হার নেমেছে যথাক্রমে ২.৯২ ও ২.৭৯ শতাংশে। ৬ ফেব্রুয়ারি সেই শনাক্তের হার সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৫১ শতাংশে নেমেছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি রোববার শনাক্তের হার গত দশ মাসে সর্বনিম্ন ২ দশমিক ২৬ শতাংশ হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার শনাক্তের হার দাঁড়ায় ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারিও একই শনাক্ত হার ছিলো। ২৩ ফেব্রুয়ারিও শনাক্ত দাঁড়ায় ২.৬৫। শুক্রবার শনাক্তের বেড়ে ৩.১৩ শতাংশ হয়। তা আরো বেড়ে শনিবার শনাক্তের হার হয়েছে ৩.৩০ শতাংশ। রোববার শনাক্তের হার তিন নিচে নামলেও আজ সোমবার তা আরো বেড়ে ৪.৩১ শতাংশ হয়। ৫ই মার্চ শুক্রবারেও শনাক্ত দাঁড়ায় ৪.৬৩। গতকাল শনাক্তের হার কমলেও আজ তা আবার বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার হয়েছে ৪.৩০ শতাংশ, যা গতকাল ছিল ৪.১৩ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১১ জনের মধ্যে পুরুষ নয় এবং নারী দুইজন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ছয়, চট্টগ্রাম বিভাগে চার ও খুলনা বিভাগে একজন রয়েছেন। সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।
মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে সাতজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে একজন ও ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন।
এই পর্যন্ত পুরুষ ৬ হাজার ৩৯৭ এবং নারী দুই হাজার ৬৫ জন মারা গেছেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছিল তিন মাস পর গত ১৮ জুন। তার ঠিক এক মাস পর ১৮ জুলাই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়ে যায়। ২৬ অগাস্ট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিন লাখ ছাড়ানোর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর পরের দুই মাসে অর্থাৎ অক্টোবরে সেই তালিকায় যোগ হল আরো এক লাখ। আর ৫ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১৪ জানুয়ারি। এর মধ্যে গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গতবছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছরে ২৩ জানুয়ারি তা আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।